মশা মারার ওষুধ ক্রয়ে অনিয়ম

চসিকে দুদকের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরবাসীর চোখের ঘুম হারাম করে দিয়েছে রাতের মশা। দিনের মশার কামড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে অনেকে। এতে মৃত্যুও হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মশক নিধন প্রোগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তথ্য যাচাই করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে দেখা গেছে, নিয়ম না মেনে ‘বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৬ বার ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার মশা মারার ওষুধ কিনেছে এ সংস্থা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত নগরের টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেলা ১টার দিকে এ অভিযান শুরু করেন দুদক কর্মকর্তারা। এসময় সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের নথিপত্র তারা তল্লাশি করেন। অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা বেশ কিছু নথি দুদক কর্মকর্তাদের জিম্মায় নিয়েছেন। তার আগে তারা চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর কক্ষে দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন এবং মেয়রের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন।

অভিযান শেষে দুদক জানায়, গেল এক বছরে ‘বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকেই ঘুরেফিরে ৭৭ লাখ টাকার মশার ওষুধ কিনেছে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগ। সরকারি ক্রয় নীতি অনুয়ায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি মালামাল ক্রয় করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। অথচ এসবের কিছুই মানেনি চসিক। চসিকের পছন্দের ঠিকাদার অরভিন সাকিব ওরফে ইভান। যিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘মশার ওষুধ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় চসিক কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। মশার ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৭ লাখ টাকার ওষুধ কিনেছে পরিচ্ছন্ন বিভাগ। একই ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে ১৬ লটে ভাগ করে মশার ওষুধ কেনা হয়েছে। অনিয়মের বিষয়ে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

মশার ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানের বিষয়ে চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমের কাছে জনতে চাইলে তিনি তথ্য গোপনের চেষ্টা করেন। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘দুদক এখানে অভিযান চালাবে কেন। তারা মশক নিধনের ওষুধ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য যাচাই করতে এসেছে। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে সহযোগিতা করেছি।’