ইংরেজিতে ফল খারাপ

নয় শিক্ষা বোর্ডে সপ্তম চট্টগ্রাম

করোনা মহামারি এবং বন্যার কারণে নির্ধারিত সময়ের পর অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের এইচএসসি পরীক্ষায় নয় শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৭ হাজার ৯২৮ জন পরীক্ষার্থী ফেল করেছেন। এদের মধ্যে ৯ হাজার ৮০৮ জন ছাত্র এবং ৮ হাজার ১২০ জন ছাত্রী রয়েছেন। খারাপ ফলাফলের দিক থেকে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা এগিয়ে।
বিষয়ভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য – এই তিন বিভাগের পরীক্ষার্থীরাই ইংরেজিতে খারাপ ফল করায় সামগ্রিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। এছাড়া অর্থনীতি প্রথমপত্রেও প্রায় ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, বোর্ডের আওতাধীন তিন পার্বত্য জেলার খারাপ ফল বোর্ডের সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলে। সেখানকার প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইংরেজি বিষয়ের দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে ভালো ফলাফল করতে পারছে না। জিপিএ-৫ এর দিক থেকে ১৮টি কলেজ এগিয়ে রয়েছে। এরমধ্যে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি ১৪টি কলেজ চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থিত।
এদিকে গত বছরের তুলনায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাশের হার দুটোই কমেছে। যা গতবারের তুলনায় ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। এছাড়া গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৫০ জন। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা ইংরেজিতে তুলনামূলকভাবে খারাপ করেছে।
সারাদেশের পাসের গড় হারের তুলনায়ও এবার পিছিয়ে চট্টগ্রাম। এবার সারাদেশে গড় পাসের হার ৮৫.৯৫ শতাংশ। আর চট্টগ্রামের পাসের হার ৮০.৫০ শতাংশ। হিসেবে সারাদেশের গড় পাসের হারের তুলনায় চট্টগ্রামের পাসের হার প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ কম। এই ফলাফলে দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে চট্টগ্রামের অবস্থান দাঁড়িয়েছে সপ্তম।
ইংরেজির পাশাপাশি মানবিকের কয়েকটি বিষয়েও অকৃতকার্যের হার তুলনামূলক বেশি। এতে করে তিন বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল এসেছে মানবিকে। মানবিকের অর্থনীতি প্রথম পত্রে প্রায় ২১ শতাংশ এবং সমাজ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে প্রায় ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। এছাড়া যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রে প্রায় ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চল ও দ্বীপ অঞ্চলে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকার কারণে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে বলে দাবি করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
ইংরেজিতে ছাত্ররা দুর্বল। ইংরেজিতে ভালো করতে হলে শিক্ষকদের মান বাড়াতে হবে এবং সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিক্ষক হিসেবে যোগ্যদের নিয়োগ দিতে হবে।
ক্লাসরুমে শিক্ষা নাই, এখন শিক্ষা চলে গেছে কোচিং সেন্টারে। ক্লাসরুমে যদি শিক্ষা না হয় তাহলে যথার্থ শিক্ষাও হবে না।