ভোগান্তির কবলে চট্টগ্রাম

বন্ধ চুলা, চলছে না গ্যাসের গাড়ি সাথে লোডশেডিং

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বাসাবাড়িতে গ্যাসের চুলা জ্বলছে না। তাই দোকান থেকে খাবার কিনে খেয়েছেন অনেকেই। সংকটের কারণে চট্টগ্রামে কোনো ফিলিং স্টেশনে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে না। রাস্তায় গ্যাসচালিত যানবাহনের সংখ্যা কমে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে গত শুক্রবার রাত ১১টায় আগাম সতর্কতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। মহেশখালীতে থাকা ভাসমান দুটি টার্মিনাল ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে আমদানি করে আনা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে গেছে। ফলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে দফায় দফায়।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে আছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। রোববার সকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলএনজি টার্মিনাল চালু না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা থাকবে।
চট্টগ্রামের কোথাও গ্যাসের চুলা জ্বলছে না। সংকটের কারণে রোববার রাস্তায় গ্যাসচালিত যানবাহন ছিল একেবারে হাতে গোনা। শিল্পপ্রতিষ্ঠানেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
এদিকে গ্যাসের সমস্যার পাশাপাশি বেড়েছে লোডশেডিং। চট্টগ্রামে দৈনিক ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট। রাউজান ও শিকলবাহা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দুটি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এসব কেন্দ্র থেকে ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
পিডিবির চট্টগ্রাম অফিস বলছে, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট। তাই লোডশেডিং বেশি হচ্ছে।
রোববার (১৪ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে ১০ থেকে ১২ দিন। ঘূর্ণিঝড় মোখায় একটি ভাসমান এলএনজি স্টোরেজ ও রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) এর পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইপলাইনটি পুনরায় মেরামত করতে ১০-১২ দিন লাগতে পারে।
এর অর্থ চট্টগ্রামবাসী দীর্ঘ ভোগান্তির কবলে পড়ে গেল। এ সমস্যা থেকে নিস্তারে বিকল্প পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। আশাকরি নাগরিক জীবন স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।