ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপেই পড়বে বাংলাদেশ, পথ কতটা কঠিন?

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

সুপ্রভাত ক্রাড়ী ডেস্ক »

১৭ অক্টোবর পর্দা উঠবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। শুরুতে প্রথম পর্বে আট দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে। সেখানকার শীর্ষ ও রানার্স-আপ সুযোগ পাবে সুপার-১২ রাউন্ডে। যেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করা আট দলের সঙ্গে যোগ দেবে এই চার দল। বাংলাদেশের এই জায়গায় আসতে খেলতে হবে প্রথম পর্ব। ‘বি’ গ্রুপে থাকা লাল-সবুজ জার্সিধারীদের প্রতিপক্ষ ওমান, স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনি। আইসিসির পূর্ব ঘোষিত বিশ্বকাপ সূচি অনুযায়ী, ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন (বি-১) সুপার-১২ পর্বে খেলবে ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপে। তবে সেটি নির্ধারণ হওয়ার আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, বাংলাদেশ সুপার-১২ খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেই পড়বে ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপে!

তাহলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন কতটা কঠিন হয়ে উঠছে? টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত সময় কাটানো মাহমুদউল্লাহরা মাত্রই সিরিজ জিতেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তার আগে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ ব্যবধানে। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হলেও বিশ্ব আসরে অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব হয়তো সহজেই পার করা যাবে, কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে গ্রুপেই পড়বে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। কেননা সুপার-১২তে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো টি-টোয়েন্টির শক্তিধর দলগুলো। ‘বি’ গ্রুপের বাংলাদেশ ও ‘এ’ গ্রুপের শ্রীলঙ্কাকে সুপার-১২ নিশ্চত করতে প্রথম পর্ব পেরিয়ে আসতে হবে। ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সুপার-১২ রাউন্ডে যাবে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের গ্রুপ-২-এ। রানার্স-আপ হলে যাবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রুপ-১-এ। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন না রানার্স-আপ হবে, সেটা জানা ‍নেই। কিন্তু আইসিসি একটা ধারা যোগ দিয়েছে। যেখানে বলা আছে, বাংলাদেশ প্রথম কিংবা দ্বিতীয় যাই হোক, তাদেরকে ধরা হবে ‘বি’ গ্রুপের সেরা (বি-১)। প্রথম পর্বের গ্রুপ ‘এ’তে থাকা শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। র্যা ঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে গ্রুপের শীর্ষ বাছাই ধরা হয়েছে।

তাই বাংলাদেশ দ্বিতীয় পর্ব বা সুপার-১২ নিশ্চিত করতেই খেলবে ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ডের গ্রুপে। আর এজন্যই দুশ্চিন্তার মেঘ জমাট বাঁধছে। যেহেতু খেলা হবে সংযুক্ত আবর আমিরাতে, স্পিন সহায়ক পিচে ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মুখোমুখি হওয়াটা নিঃসন্দেহে কঠিন। অন্য দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্রই সিরিজ জিতলেও গা এলিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। ঘরের মাঠে মাহমুদউল্লাহরা যে দলের বিপক্ষে খেলছে এবং বিশ্বকাপে কিউইদের যে স্কোয়াড, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারত ও পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি শক্তি নিয়ে নতুন ‍করে বলার নেই। আর আফগানিস্তান কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছে। আছে একঝাঁক তরুণ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। যাদের অনেকে ক্রিকেট বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেন। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রায় বড় পরীক্ষায় পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ১৭ অক্টোবর উদ্বোধনী দিনে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামবে ‘বি’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ। প্রথমে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় মাঠে নামবে একই গ্রুপে থাকা স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। তারপরই স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহরা। এরপর ১৯ ও ২১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। প্রথম রাউন্ড পেরোতে পারলে পরের ধাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ড এবং বাছাই পর্ব পার করা আরও একটি দল। তখন ২৫ অক্টোবর শারজাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরু হবে বাংলাদেশের ‘আসল’ লড়াই। ২৭ অক্টোবর গ্রুপ ‘এ’ রানার্স-আপ দল ও ৩ নভেম্বর লড়বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর ৫ ও ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ খেলবে যথাক্রমে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে।

প্রথম রাউন্ড:

গ্রুপ ‘এ’: শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া।

গ্রুপ ‘বি’: বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি, ওমান।

সুপার-১২:

গ্রুপ-১: ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এ-১, বি-২।

গ্রুপ-২: ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, এ-২, বি-১।