বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া

নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের প্রকৃত কারণ প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেত্রী শবনম। ছবি ইনস্টাগ্রাম।

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বিয়ে ভাঙলে এখনও অভিযোগের আঙুল ওঠে মেয়েদের দিকেই। ফলে, সেই কলঙ্কের ভয়ে আজও জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখেন বহু নারী। নয়তো মুখ ফিরিয়ে নেন জীবন থেকে। আত্মহননের মাধ্যমে। তেমনই এক মেয়ের করুণ পরিণতি ঘটেছে দেশে।

শরীরে ‘প্রচুর’ আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ঢাকার অভিজাত এলাকা বনানীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক তরুণীর মৃত্যুর পর অভিযোগ উঠেছে, তরুণীটি পারিবারিক নির্যাতনে নিহত হয়েছেন।

এলমা চৌধুরী মেঘলা নামের এই তরুণীটির মাস ছয়েক আগেই বিয়ে হয়েছে। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী।

যাঁর সমব্যথী শবনম ফারিয়ার মতো গায়িকা, অভিনেত্রীরা। ফেসবুকে প্রত্যেকেই মৃতার উদ্দেশে সমবেদনা জানিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই লিখতে গিয়ে এক বছর পরে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের প্রকৃত কারণ প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেত্রী শবনম।

কী লিখেছেন বাংলাদেশের তারকা? কেন বিচ্ছেদ এসেছিল তাঁর জীবনে? তার আগে এক নজর তাঁর বিবাহিত জীবনে। কাজের সূত্রেই শবনমের আলাপ হারুনুর রশিদ অপুর সঙ্গে। ২০১৮-য় আংটি বদল। তার পরে বিয়ে। ভালবেসে সাত পাক ঘোরার আয়ু মাত্র এক বছর ৯ মাস। ২০২০-তে পাকাপাকি বিচ্ছেদের সময় অভিনেত্রী বলেছিলেন, দাম্পত্যে বনিবনা ছিল না। তাই পারস্পরিক সম্মতিতে বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন।

বুধবার শবনম প্রথম জানালেন, বধূ নির্যাতনের শিকার ছিলেন তিনিও। হারুনুর নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। সেই অত্যাচারে তাঁর হাত ভেঙে গিয়েছিল। তা নিয়েই তিনি ‘দেবী’ ছবির প্রচারে অংশ নিয়েছেন। লিখেছেন, ‘যখন কেউ জানতে চেয়েছেন কী হয়েছে, বলেছি সিঁড়ি থেকে পড়ে চোট পেয়েছি। আমার সাহস ছিল না সকলকে খুলে বলার, ঠিক কী ভাবে ব্যথা পেয়েছি! কারণ আমি জানতাম, এই মানুষটার সঙ্গেই থাকতে হবে। নইলে লোকে কি বলবে!’

তাঁরই মতো লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া নারীর যন্ত্রণা তাই অনুভব করতে পেরেছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, সে দিন তাঁর পাশে তাঁর মা না থাকলে তিনিও হয়তো একই পথ বেছে নিতেন। এক দিন পরেই যদিও সেই সুর আচমকা বদলে ফেলেছেন অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার শবনমের দাবি, তিনি কারও সম্মান নষ্ট করতে আগের দিনের পোস্টটি করেননি। বরং সমাজের দৃষ্টি দিয়ে এক মেয়ের জীবনকে বর্ণনা করতে চেয়েছেন মাত্র। তিনি নিজে বিবাহের প্রতিষ্ঠানের উপরে যথেষ্ট বিশ্বাসী। চট করে বিয়ে ভাঙাতেও বিশ্বাসী নন। বন্ধুদেরও পরামর্শ দেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার। তিনি বেঁচে গিয়েছেন তাঁর মা-বোনেরা তাঁর পাশে ছিলেন বলে। সেই সঙ্গেই শবনমের আফশোস, ‘এই সমাজ পুরুষদের মহিমান্বিত করতে এবং নারীদের লজ্জা দিতে ভালোবাসে। তুমি মরে গেলে মানুষ দুঃখ পাবে। তুমি যদি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা কর এবং তালাক পাও, “তুমি খারাপ”!’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা