পলিথিন কারখানা বন্ধের ঘোষণা মেয়রের

‘পলিথিন আমাদের জন্য অভিশাপ। নগরবাসী ও ব্যবসায়ীদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হবে।’

গতকাল বুধবার সকালে নগরীর টাইগার পাসস্থ করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে ‘পলিথিন মুক্ত চট্টগ্রাম’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি পরিবেশ ও নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়ার্ডওয়ারি কোন পলিথিন কারখানা আছে কিনা তা চিহ্নিত করে তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ স্ব স্ব ওয়ার্ডে কোন পলিথিন কারখানা থাকলে তার তালিকা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে জমা দিতে বলেছেন তিনি।

পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সভাপতিত্বে ও চসিক সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিচালক মো. নুরুল্লাহ নুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার এসএম মোস্তাইন হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আ স ম জামসেদ খোন্দকার, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরো বলেন, পলিথিন বন্ধের মূল উদ্দেশ্য হলো চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করা। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজন পাহাড় কাটা বন্ধ করা, পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পাইলিং এর মাটি নালা-খালে ফেলা বন্ধ করার ব্যাপারে সব সেবা সংস্থাকে এ ব্যাপারে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক মো. নুরুল্লাহ নুরী বলেন, আমরা সাধারণত ৫ ধরনের পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। মোটা পলিথিন ব্যবহার করা গেলেও নাগরিকদের যত্রতত্র পলিথিন না ফেলার জন্য সচেতন করতে হবে এবং পলিথিন ডাম্পিং করা ঠিক হবে না।

তিনি চসিককে আবাসিক গৃহ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সবুজ ও লাল রংয়ের বিন সরবরাহের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে করে আবর্জনার পাশাপাশি পলিথিনও আলাদা করা যাবে। নুরুল্লাহ নুরি পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়ে বলেন, নগরীর কিছু প্রভাবশালী মহল রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে পাহাড় কাটেন ফলে পলিথিনের মত পাহাড়ের বালিও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।

অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক আ স ম জামসেদ খোন্দকার ময়মনসিংহ জেলার সাফল্যের কথা উল্লেখ করে সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি পলিথিনের বিকল্প টিস্যু পেপারের থলে ব্যবহারে ব্যবস্থা নেয়া যায় বলে উল্লেখ করেন।

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে পলিথিন বন্ধের পক্ষে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে বলেন। প্রয়োজনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রত্যেক সেবাসংস্থাকে নিয়ে একদিন পলিথিন মুক্ত ও আবর্জনা পরিষ্কারের কর্মসূচি গ্রহণ এবং পলিথিন বন্ধে জরিমানা ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা ফজলুল কাদের, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী, স্থপতি আব্দুল্লাহ ওমর প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি