পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

দীপন বিশ্বাস, কক্সবাজার »
করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় আবারও পর্যটকের আগমনে মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল। সমুদ্রের কবিতা চত্বর পয়েন্ট থেকে কলাতলী দীর্ঘ ২ কিলোমিটার সাগরতীর জুড়ে ছিল লোকে-লোকারণ্য। এছাড়া কক্সবাজারের হিমছড়ি, টেকনাফের সেন্টমার্টিন, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, রামু বৌদ্ধ মন্দির, ইনানী, পাটুয়ারটেক সৈকতসহ নানা পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকে টাসা ছিল। এসব স্থানে আনন্দ আর হই-হুল্লোড়ে ভুলে গেছে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানার নিয়ম। সব স্পটে অধিকাংশ পর্যটকের মুখে কোন মাস্ক দেখা যায়নি। এদিকে সাগর উত্তাল হওয়ায় কক্সবাজার সমুদ্রস্নানে নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ ও পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মাইকিং করছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা। আর নিরাপত্তা জোরদার করতে দেখা গেছে টুরিস্ট পুলিশকে।
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাচ্ছে সমুদ্রের রূপ। শীতল সাগরে ফিরেছে ঢেউয়ের উত্তাপ। বেড়েছে সূর্যের তাপও। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে গত ২ মাস কক্সবাজারে কমেছিল পর্যটকের আগমন। ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পড়ে যান দুশ্চিন্তায়। কিন্তু এখন করোনার সংক্রমণ কমতে থাকায় ফের সৈকতে বেড়েছে পর্যটক। আনন্দ আর হই-হুল্লোড়ে মেতেছে ভ্রমণপিপাসুরা।
ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক দম্পতি আবদুল কাদের ও নূর নাহার বলেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কক্সবাজারে বেড়াতে আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে আসতে পারেনি। এখন পরিবার নিয়ে ৩ দিনের জন্য ঘুরতে এলাম। বেশ ভালো লাগছে।
আরেক পর্যটক আবদুর রহিম বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বেড়াতে আসছি কক্সবাজার। থাকবো দু’দিন। যেটুকু সময় থাকে পরিবার নিয়ে পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে চেষ্টা করবো। কক্সবাজারে বেশ আনন্দ করছি। তবে মানুষের চাপ বেশি আর সূর্যের তাপও বেড়েছে।
ওমর সুলতান নামে এক পর্যটক বলেন, পর্যটকের চাপ বাড়লে এখানকার ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। যেমন এখন টিউব ব্যবসায়ী ও জেড স্কি ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। তাছাড়া খাবারের রেস্টুরেন্টগুলোতেও দাম নেওয়া হচ্ছে বেশি। প্রশাসনের কোন নজরদারি দেখছি না।
সী সেইফ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ মো. ওমর ফারুক বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটকের চাপ বাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে লাইফ গার্ড কর্মীদের। তবে সমুদ্রস্নানে নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ তাদের। আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে, যা বোঝা যায় সমুদ্রের ঢেউ দেখে। এখন সাগর উত্তাল তাই পর্যটকদের নিয়ম মেনে গোসল করা প্রয়োজন দুর্ঘটনা এড়াতে। বিশেষ করে যেখানে পতাকা রয়েছে এবং লাইফ গার্ড কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে সেখানে গোসল করলে নিরাপদ।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দায়িত্বপালনরত টুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক মিঠুন দত্ত বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকিং করছেন তারা। সন্ধ্যা নামলেই সতর্কতা আরো বেশি জোরদার করা হচ্ছে। যাতে কোন পর্যটক দুস্কৃতকারীদের কবলে না পড়েন।