পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের ছয় প্রস্তাব

লালখান বাজার অংশে পাহাড়ের সৌন্দর্য রক্ষায় চার লেনের পরিবর্তে দুই লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে – সিডিএ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলমান থাকলেও এখন নতুন করে আপত্তি করছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। সম্প্রতি সমন্বয় সভার মাধ্যমে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশের নতুন ডিজাইন করার পর সিটি কর্পোরেশনও আপত্তি জানিয়েছে। এবার সিটি কর্পোরেশনের পর পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম ওয়েবিনার করে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছে।

এদিকে সিডিএ বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয় সভায় লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত কোনো পাহাড় কাটা হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়ে রেখেছে। একইসাথে এই অংশে চার লেনের পরিবর্তে দুই লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এই অংশে কোনো ধরনের ফ্লাইওভার নির্মাণ করার ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন আপত্তি জানিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি লেখে। এবার ছয় প্রস্তাবনা দিল পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম।

ফোরামের ট্রান্সপোর্টেশন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী সুভাস বড়ুয়া প্রেরিত বার্তায় বলা হয়, ফোরামের পক্ষ থেকে গত রোববার রাতে এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেই ওয়েবিনারে টাইগার পাস এলাকার নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণœ  রাখতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে লালখান বাজার না নিয়ে টাইগার পাস পর্যন্ত করার দাবির বিষয়ের ফোরাম সদস্যরা একমত হয়েছেন। একই সঙ্গে দেওয়ান হাটে শেষ করার দাবি জানিয়ে ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম।

প্রস্তাবনাগুলো হলো- এটি টাইগার পাস পর্যন্ত না এনে, দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের দক্ষিণ পাড়ে শেখ মুজিব রোডের উপযুক্ত প্রশস্ত স্থানে শেষ করা, পেশাগতমান, পরিবেশ সংরক্ষণ ও নান্দনিকতা বজায় রেখে সংবেদনশীলভাবে পাহাড় ঘেঁষে নতুন যান ও পথচারি চলাচলের পথ দিয়ে ডিজাইন করা, লাল খানবাজার গোল চত্ত্বর থেকে দেওয়ান হাট ওভারব্রিজ-ফ্লোরা-পাস-আমবাগান গোলচত্তর পর্যন্ত টাইগার পাসের স্বল্প দীর্ঘ পরিসরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যানচলাচলের জন্য উভয় দিকে একটা করে ডেডিকেটেট নো-স্টপেজ লেইন চিহ্নিত করা, টাইগার পাস ট্রাফিক গোল চত্ত্বরের সংস্কার ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করা, নগরের ট্রাফিক ও যানবাহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং দেওয়ানহাট ওভার ব্রিজ সংস্কার করা প্রয়োজন।

ফোরামের বক্তব্যের বিষয়ে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন,‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হলে বিমান বন্দর থেকে ১৫ মিনিটে ট্রাফিক দেওয়ানহাট এলাকায় আসতে পারবে। একইভাবে বহদ্দারহাট এলাকা থেকেও ট্রাফিক দ্রুত আসবে। তখন লালখান বাজার থেকে দেওয়ানহাটের মধ্যবর্তী স্থানে ট্রাফিক কনজেশন হবে। এজন্য লেনের পরিমান বাড়ানো প্রয়োজন। শুধুমাত্র পাহাড় ও এর সৌন্দর্য রক্ষায় লেন না বাড়িয়ে চার লেনের পরিবর্তে এই এলাকায় দুই লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর সিকান্দার খানের সভাপতিত্বে ও পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের জেনারেল সেক্রেটারি স্থপতি জেরিনা হোসেনের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী এবিএম বাসেত, স্থপতি বিধান বড়ুয়া, স্থপতি তৌহিদ ও নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া প্রমুখ।