জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালু

প্রতিদিন সাশ্রয় হবে ৩৫-৪০ হাজার টাকা#
নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা চিকিৎসায় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের বিকল্প নেই। আর এই নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সুবিধা না থাকায় চট্টগ্রামের করোনার বিশেষায়িত হাসপাতাল বলে পরিচিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রথম দিকে রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে। দেশের অন্যতম শিল্পগ্রুপ এসআলমের পরিচালক মোরশেদ আলম মৃত্যুর পর তা আরো দানা বাঁধে। পরে এই হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালুর জন্য প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে পাইপ লাইন লাগিয়ে দেয় এসআলম গ্রুপ। পাইপ লাইন স্থাপনের পর সরকারি তহবিলের ৮০ লাখ টাকা দিয়ে স্থাপন করা হয় অক্সিজেন প্ল্যান্ট। এর মাধ্যমে শুক্রবার থেকে জেনারেল হাসপাতালে সিলিন্ডার যুগের অবসান হলো।
এবিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ব¡াবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, আমরা গত বুধবার প্ল্যান্ট বসানোর পর গতকাল বৃহস্পতিবার আইসিইউতে আগে থেকে থাকা পাইপ লাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করেছি। আর আজ (শুক্রবার) সাধারণ বেডের সাথে যুক্ত থাকা পাইপলাইনগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ চালু করেছি। এতে আজ থেকে সব রোগী পুরোদমে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সুবিধা পাবে।
আগে ১০০টি বড় ও ১৮০ টি ছোটো সাইজের সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হতো। এখন এসব সিলিন্ডার কী করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা এসব সিলিন্ডার রেখে দিব। এই প্ল্যান্টে হঠাৎ যদি কোনো গোলযোগ দেখা দেয় তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে তা ব্যবহার করা যাবে।’
অক্সিজেন সিলিন্ডার সাশ্রয় নাকি সেন্ট্রাল অক্সিজেন সি্েটম চালু করায় সাশ্রয় হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, ‘প্রথমত, রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেশি স্পিডে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমের বিকল্প নেই। এতে রোগীরা লাভবান হবে। দ্বিতীয়ত, এই পদ্ধতিতে আমাদের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। তাই আর্থিকভাবে লাভবান হবে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আগে দিনে তিনবার করে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলোতে গ্যাস ভরতে হতো। আর এতে আমাদের দিনে খরচ হতো প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু এখন একবার ১৩ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার প্ল্যান্টে গ্যাস ভরা হলে তা একমাসেরও বেশি সময় চলে যাবে। এতে গড়ে দিনে খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। যদিও এখন করোনার কারণে গ্যাস বেশি লাগবে, তারপরও দিনে ১৫ হাজার টাকার বেশি খরচ লাগবে না মনে হচ্ছে।’
জানা যায়, এই প্ল্যান্টটি ১৩ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার হলেও প্রাথমিকভাবে ৬ হাজার লিটার অক্সিজেন রিফিল করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই অক্সিজেনে ৪ থেকে ৫ দিন যেতে পারে। স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড এই প্ল্যান্টে অক্সিজেন সরবরাহ করে দিয়ে যাবে। প্ল্যান্ট থেকে পাইপের মাধ্যমে চলে যাবে প্রতিটি রোগীর বেডে। প্রসঙ্গত, এই হাসপাতালে আইসিইউসহ ১১০টি বেড রয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ছাড়া চট্টগ্রামের অন্য কোনো হাসাপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম নেই।