জার্মানির হয়ে আর কখনোই খেলবেন না ওজিল

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
সম্প্রতি আর্সেনাল ছেড়ে তুরস্কের ক্লাব ফেনেরবাচে যোগ দিয়েছেন সাবেক জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিল। নিজের পূর্ব পুরুষদের দেশে পা রেখে ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী জানিয়ে দিলেন, আর কখনোই জার্মানির জার্সিতে খেলবেন না তিনি।
ইস্তানবুলে ফেনেরবাচের খেলোয়াড় হিসেবে আনুষ্ঠানিক পরিচিতি পর্ব শেষে পরিষ্কার তুর্কি ভাষায় ওজিল বলেন, ‘আমি জার্মানি জাতীয় দলের সাফল্য কামনা করি। কিন্তু আমি আর কখনোই তাদের হয়ে খেলব না।’
৭ বছর আগে ব্রাজিলের মাটিতে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ওজিল। কিন্তু ২০১৮ বিশ্বকাপের ঠিক আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের সঙ্গে তার একটি ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নিজ দেশ জার্মানিতে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এমনকি ওজিলের বিয়েতেও উপস্থিত ছিলেন।
রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানির ভরাডুবির পর ওজিলের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা শুরু হয়। এরপর ক্ষোভে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন দেশটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডার। কারণ হিসেবে অবশ্য তিনি বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। জার্মানির ফুটবল ফেডারশনের কাছ থেকেও বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ তোলেন তিনি।
আর্সেনালে অবশ্য ওজিলের সময়টা ভালোই যাচ্ছিল। বর্তমান কোচ মিকেল আরতেতার অধীনেও করোনালের আগে নিয়মিত ছিলেন তিনি। ক্লাবের সবচেয়ে বেশি বেতনের খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন। কিন্তু এরমধ্যেই জিনজিয়াংয়ে উইগুর মুসলিমদের ওপর চীনের ‘দমন-নিপীড়ন’ নিয়ে মুখ খোলায় ক্লাবের বিরাগভাজন হন তিনি। এর জেরে করোনা বিরতির পর তাকে আর মাঠেই দেখা যায়নি। এমনকি তাকে গানারদের মূল স্কোয়াড থেকেই বের করে দেওয়া হয়। এই জানুয়ারির দলবদলের বাজারেই তাই ক্লাব ছাড়েন তিনি।
তুরস্কের ক্লাবটির সঙ্গে ৩২ বছর বয়সী ওজিলের চুক্তির মেয়াদ সাড়ে তিন বছরের। সেখানে তিনি বছরে ৩ মিলিয়ন ইউরো আয় করবেন বলে জানা গেছে। অথচ আর্সেনালে খেলার সময় তার আয় ছিল বার্ষিক ১৬ মিলিয়ন ইউরো। তবে ওজিলের বিশাল অঙ্কের বেতন দিতেও হিমশিম খেতে হবে দেনায় ডুবে থাকা ফেনেরবাচকে। এজন্য এমনকি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আলী কোক সমর্থকদের কাছে ডোনেশন চেয়ে আবেদনও করেছেন।
এদিকে ফেনেরবাচে ওজিল ৬৭ নম্বর জার্সি পরে খেলবেন। এর আগে আগে আর্সেনালে তার জার্সি নম্বর ছিল ১০। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে ৬৭ নম্বর জার্সি কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও মূলত পারবারিক কারণে এই জার্সি নম্বর বেছে নিয়েছেন তিনি। ওজিলের পূর্ব পুরুষ তুরস্কের। তার পরিবার তুরস্কের জঙ্গলডাক শহরে বাস করতো। ওই শহরের পোস্টাল কোডের প্রথম দুই ডিজিট হচ্ছে ৬৭। এজন্যই মূলত জার্সি নম্বর হিসেবে এটাকে বেছে নিয়েছেন তিনি। খবর : বাংলানিউজ’র।