ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে গোলাগুলি, আহত ১১

মিরসরাই

চমেক হাসপাতালে ৭ জন চিকিৎসাধীন

নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই »

মিরসরাইয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার ভোর রাতে উপজেলার জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দশ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার শেষ রাতে জোরারগঞ্জ বাজারে মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্র ও ছররা গুলির আঘাতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহেদ বিন কামাল ও সাধারণ সম্পাদক সেফায়েত হোসেনসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা মেলা গেটে স্থাপিত ব্যানার, ফেস্টুনসহ আশপাশের কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুর করা হয় ৬টি মোটর সাইকেল।

সংঘর্ষে আহত অন্যান্যরা হচ্ছেন চট্টগ্রাম উত্তরজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাউছার আহমেদ আরিফ (৩০), উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ইমন (২১), জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাহেদ বিন কামাল অনিক, ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ, আব্দুর রহমান (১৮) সাইফুদ্দিন রিফাত (১৭) রিয়াজ উদ্দিন (৩৬) আমজাদ হোসেন (২১) রাহুল বড়ুয়া (২৪) মো. তারেক হোসেন (২৬) মিরাজ আকবর (২০) সরোয়ার হোসেন (২২) কাউসার আহমেদ (৩০)। আহতরা সবাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

এদের মধ্যে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি শাহেদ বিন কামালসহ ৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ২২ ডিসেম্বর মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে দশ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়। মেলার শেষদিন ছিল শনিবার। রাত সাড়ে চারটায় মেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হামলায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ আহতদের মধ্যে সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেলা আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি করতে না পারায় মেলার শেষ দিকে এসে হামলা করা হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে হামলার সাথে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীরা যুক্ত বলে জানিয়েছেন। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল দেওয়ানজি জানান, এই হামলার সাথে মাঈনুদ্দীন টিটু সরাসরি জড়িত। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈনুদ্দীন টিটু বলেন, শনিবার রাতে জোরারগঞ্জ বাজারের মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে আমার কিছু শুভাকাক্সক্ষীর উপর প্রথমে হামলা করে চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের অনুসারীরা। পরে প্রতিরোধ করতে গেলে দুইক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চেয়ারম্যানের অনুসারীদের হাতে আমার শুভাকাক্সক্ষী ৫ ছেলে আহত হয়েছে। এ সংঘর্ষের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আদিত ইসমাইল বলেন, জোরারগঞ্জে মেলায় সংর্ঘষের ঘটনায় ১১ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, জোরারগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার শেষ সময়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪-৫ জন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

 

»