চুনা পাথরের পৃথিবীর দ্বিতীয় গভীরতম গুহা

সুপ্রভাত ডেস্ক :
কুরুভেরা পৃথিবীরে দ্বিতীয় গভীরতম গুহা বলে দাবি গবেষকদের। কুরুভেরা নাম হলেও একে ভরেঞ্জাও বলা হয়। করুভেরা গুহা বা কুরুভেরা ভরেঞ্জা গুহা। গুহাটির আরেক নাম ভোরোনিয়া কেভ,রাশিয়ান ভাষায় যার অর্থ কাকের গুহা। কাকের গুহা নাম কীভাবে হলো? তারও রয়েছে এক ইতিহাস।
১৯৮০ এর দশকে কিউবার গুহা গবেষকরা এই গুহার প্রবেশ মুখে প্রচুর কাকের বাসা দেখতে পান আর তখন তারা এই গুহা মুখটিকে কাকের বাসা বলে।এই ভাবেই গুহাটির দ্বিতীয় নামটি সাহিত্য ও মিডিয়াতে রয়ে যায়। এর আগে ১৯৬০ সালে জর্জিয়ার গুহা গবেষকরা এর ৯০ মিটার (২৯ ফুট) গভীর পর্যন্ত আবিষ্কার করেছিলেন।
তারও চার বছর আগে ১৯৫৬ সালে ফ্রান্সের একদল অভিযাত্রি প্রথম গুহার ১,০০০ মিটার (৩,২৮১ ফুট) নিচে নামতে পারে। ২০০১ সালে ইউক্রেনীয় ইউরি কাশনের নেতৃত্বে একটি দল গুহার ১,৭১০ মিটার (৫,৬১০ ফুট) নেমে বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছিল। ২০০৭ সালে ইউক্রেনের সাঁতারু জেনাডি সামোখিন গুহার ভেতর ২১৯১ মিটার পর্যন্ত নামে।
২০১২ সালে তিনিই আবার নিজের করা রেকর্ড ভেঙে অতিক্রম করে যান ২১৯৭ মিটার (৭,২০৮ ফিট) পর্যন্ত। ২,০০০ মিটারের বেশি গভীর দুটি গুহার মধ্যে কুরুভেরা একটি। এটি পৃথিবীর পশ্চিম ককেসাসের গাগড়া জেলার কৃষ্ণ সাগরের তীরে আরাবিকা মাসসিফে অবস্থিত।
গুহার নাম কুরুভেরা হয় রাশিয়ান ভূগোলবিদ আলেকজান্ডার কুরুভেরার নামে। আরবিকা মাসসিফ হচ্ছে চুনাপাথরের তৈরি বিশাল এক ঢাল, (যা একবার সমুদ্রের তলদেশে সমতল এবং মসৃণ ছিল বলে মনে হয়)যা উচ্চ জুরাসিক এবং নিম্ন ক্রিয়েটিস কালে সৃস্টি হয়েছে। এই চুনাপাথর ঢাল ৫ থেকে ৩৩ মিলিয়ন বছর ধরে আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠে।
শত শত বড় এবং ছোট ফাটলের সঙ্গে ভেঙে পড়ে। এখানে সবচেয়ে লম্বা চূড়া স্পেলিওলজিস্টের চূড়া ২৭০৫ মিটার উচ্চ।এই পর্বত সারিতে কয়েকটি গুহা রয়েছে এবং এদের মধ্যে পাঁচটি গুহার গভীরতা ১০০ মিটার।
সম্ভবত এই গুহাগুলোর বিকাশ শুরু হয়েছিল ৫ মিলিয়ন বছর আগে। আরবিকা মাসসিফে এখনো গুহা গঠন অব্যাহত। ১৯৬০ সালে জর্জিয়ার গুহা গবেষকরা এর (কুরুভেরা) প্রবেশ পথটি আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে রাশিয়ান ভুগোলবিদ আলেকজান্ডার কুরুভেরার নামে এই গুহার নাম রাখা হয়েছে।
গুহামুখ এর গভীরতার তুলনায় অনেক ছোট আর সরু।গুহার ভিতরে খাড়া দেয়াল আছে। এই দেয়াল কোনো কোনো জায়গায় খুব সরু আবার কোনো কোনো জায়গায় বেশ প্রশস্ত। গুহার ভেতরে আছে ঝর্ণা আর বড় বড় বাক আছে। গুহার ভেতরে পানিভর্তি অনেক গুলো সুড়ঙ্গ রয়েছে। পানিভর্তি সবচেয়ে গভীর সুড়ঙ্গটির গভীরতা ৫২ মিটারের কাছাকাছি। এই গুহার ভেতরে ও পানিতে বাস করে দুর্লভ প্রজাতির নানা প্রাণী।
২০০১ সালে কুরুভেরা আনুষ্ঠানিক ভাবে মানুষের পরিচিত গভীরতম গুহা হয়ে ওঠে। এটি খুব দর্শনীয় এলাকা,ঘন জঙ্গলের আচ্ছাদিত এবং অবিশ্বাস্য পাহাড়ের দৃশ্যে সজ্জিত। বিখ্যাত অনেক অভিযাত্রীরা বিভিন্ন সময় এখানে ভিড় করছেন। অভিযানে যাচ্ছেন কুরুভেরা গুহা। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।