চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

সামাজিক সংক্রমণের আশংকা

চবি সংবাদদাতা»

চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ডেল্টা) শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে যৌথ গবেষণার ফলাফলস্বরূপ এই তথ্যটি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগ এবং ঢাকা আইসিডিডিআরবি।
চট্টগ্রাম বিভাগের ৭টি কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাব ও হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত ৪২টি নমুনার মধ্যে ২ জনের শরীরে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষকদল জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পাশাপাশি আধিক্য পাওয়া গেছে দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের।
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি সুপ্রভাতকে নিশ্চিত করেছেন গবেষণা দলের নেতৃত্বে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান।

জানা যায়, গবেষণায় চট্টগ্রাম বিভাগের সাতটি কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাব এবং হাসপাতাল থেকে সর্বমোট ৪২টি করোনার নমুনা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়। যার মধ্যে ২টি (৪.৮ শতাংশ) ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, ৩টি (৭.২ শতাংশ) নাইজেরিয়ার ইটা ভ্যারিয়েন্ট, ৪টি (৯৫ শতাংশ) যুক্তরাজ্যের আলফা ভ্যারিয়েন্ট এবং বাকি ৩৩টি (৭৮.৫ শতাংশ) দক্ষিণ আফ্রিকার বিটা ভ্যারিয়েট ধরন শনাক্ত হয়। তবে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়া দুইজন কখনোই ভারত যাননি এবং সম্প্রতি ভারত থেকে এসেছে এমন কারো সংস্পর্শেও আসেননি। তাই গবেষক দল ধারণা করছেন, চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী চীনের উহান থেকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকে এই পর্যন্ত সার্স-কভ-২ মোট ১০ বার রূপ পরির্তন করার মাধ্যমে মূলত ৬টি দেশে (যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল এবং ভারত) অতিসংক্রমণ এবং মহামারী আকার ধারণ করেছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমে ১৩ সদস্যের গবেষক দলের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান। এতে অন্যতম সহযোগী গবেষক হিসেবে রয়েছেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা আঁখি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সুজৎ পাল, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান। উক্ত গবেষণায় অর্থায়ন করে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)।