চট্টগ্রামে আবারো বিধিনিষেধ

রাত ৮টার পরে নগরে সকল কার্যক্রম বন্ধ
হোটেল রেস্টুরেন্ট স্বাস্থ্যবিধি না মনলে কঠোর ব্যবস্থা
কমিউনিটি সেন্টার ও পারিবারিক জনসমাগম বন্ধ
৩০ জুন পর্যন্ত ফটিকছড়ি লকডাউন
সড়কপথে ঢাকাগামী সকল পরিবহন বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রামে করোনার উচ্চামাত্রা সংক্রমণ রোধে আজ বুধবার রাত ৮টার পরে সকল দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পর্যটন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, রিসোর্ট ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। হোটেল ও রেস্টুরেন্টে নির্দেশনা না মানলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। এছাড়া অধিক সংক্রমণশীল উপজেলা ফটিকছড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির সমন্বয় সভায় সদস্যদের পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধে বুধবার থেকে ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরে রাত ৮টার পর থেকে সকল দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে। পর্যটন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, রিসোর্ট ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
হোটেল ও রেস্টুরেন্টকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, যদি ধারণক্ষমতার অর্ধ সিটের বেশি সেবা গ্রহীতা থাকে তবে সর্বোচ্চ জরিমানা করা হবে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সড়কপথে ঢাকাগামী সকল পরিবহন বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান এ নির্দেশনার আওতামুক্ত। নগরে এ নির্দেশনা পালনে আজ সন্ধ্যা থেকে ১২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যথাযত স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
অন্যদিকে সিএমপির সহযোগিতায় পতেঙ্গা পর্যটন এলাকার সকল প্রবেশপথ বন্ধ রাখা হবে। সিটি করপোরেশনের করোনা প্রতিরোধ কমিটির সহায়তায় ৪১টি ওয়ার্ড কমিশনারের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে গণপরিবহনে অর্ধসিট যাত্রী নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করবেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি কোন কমিউনিটি সেন্টারে কোন আনুষ্ঠানিক আয়োজন হয়, এতে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। সকল সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
উপজেলা পর্যায়ে করোন সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলায় গত দুই সপ্তাহে সংক্রামণের হার ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ হওয়ায় আজ ২৩ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপজেলায় সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান সকাল ৭ থেকে ১১টা ও দুপুর ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এ উপজেলার গণপরিবহন উপজেলা থেকে বের হতে পারবে না, এবং হাইওয়েতে উঠতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে মসজিদে জামাত চলবে। এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানা ইউএনও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ও বিধিনিষেধ মানাতে মাঠে কাজ করবে। যদি প্রয়োজন হয় উপজেলা পর্যায়ে আরো লকডাউন দেওয়া হবে। এছাড়া হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ডে সংক্রমণের হার অনেক বেশি।
সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ঈদের পর থেকে সংক্রমণ বাড়ার আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল যা বর্তমানে পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত ১৪ দিনে ৬ হাজার ৫৭৩ নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১০৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের বেশিরভাগ উপজেলায়। যা শতকরা ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তাছাড়া চট্টগ্রামে মৃত্যুর হার জাতীয় পর্যায়ের চেয়ে কম আছে। চট্টগ্রামে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ১২ শতাংশ। এ অবস্থায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারলে সংক্রমণ রোধ অনেকাংশে সম্ভব।