গাছতলায় ক্লাস করলেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা

smart

সুপ্রভাত ডেস্ক »

টানা ৮২ দিন আন্দোলনের পর অবশেষে ক্লাসে ফিরেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে ‘ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষ’ ছেড়ে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বসেই ক্লাস করেছেন তারা। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) নগরের বাদশা মিয়া সড়কের পাশে অবস্থিত চারুকলা ইনস্টিটিউটের চিত্র এটি। ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন, দুজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের বাইরে আমাদের ক্লাস নিয়েছেন।

এছাড়া আর কোনও শিক্ষক বাইরে ক্লাস নিতে রাজি হননি। তবে পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আমরা সবাই বাইরেই অবস্থান করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দাবির বিষয়ে অগ্রগতি না হলে আমরা পুনরায় আন্দোলনে ফিরে যাবো। ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শায়লা শারমিন বলেন, চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে এখানে ক্যাম্পাসটা সেভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে সবধরনের সুযোগ সুবিধা যাতে আমরা পাই। যেমন আমাদের স্টুডিও, ক্লাসরুম, গ্যালারিসহ অন্যান্য অবকাঠামো বিশেষভাবে চারুকলার শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে কিছু শ্রেণিকক্ষ সংস্কারের প্রয়োজন আছে। প্রকৌশলীরাও বলেছেন ভবনগুলো মেরামত করে ব্যবহার করা যাবে।

তিনি বলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি শিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্বপ্ন ছিল যে এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে শহরে একটি শিল্পকলা চর্চার কেন্দ্র গড়ে উঠবে। প্রবীণরা আমাদের জন্য যে বিষয়গুলো ভেবেছিলেন সেটাও আমাদের ভেবে দেখা উচিত। খবর বাংলানিউজ।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুফিয়া বেগম বলেন, দীর্ঘ আড়াই মাস পর শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেছেন। প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ করছে এবং আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু মাঝে শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাবুঝির কারণে বেশকিছুদিন কাজ বন্ধ ছিলো। সবাই ক্লাসে ফিরতে আগ্রহী। তিনি আরও বলেন. আজকে (সোমবার) শিক্ষা অধিদফতর থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলীরা চারুকলা ভবন পরিদর্শন করে গেছেন। আমাদের শুধুমাত্র চারতলার ছাদ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। সেটা মেরামতের কাজ চলছে। বাকি যেসব শ্রেণিকক্ষ নিরাপদ সেগুলো ক্লাসের উপযুক্ত।

শিক্ষা অধিদফতরের প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, আমরা শ্রেণি কক্ষসহ পুরো ভবন পরিদর্শন করেছি। চারতলার ছাদে পানি জমে ছাঁদ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা সংস্কারের মাধ্যমেও ব্যবহার করা যাবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ অন্য কোনও তলায় আমাদের চোখে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু পড়েনি। এছাড়া পুরো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ কি-না সেটা শুধুমাত্র দেখে বলা যাবে না, এগুলা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার আছে।

এর আগে রোববার (২২ জানুয়ারি) ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে আন্দোলনের ৮২তম দিনে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি আদায়ের কোনও অগ্রগতি দেখা না গেলে পুনরায় আন্দোলনে নামবেন বলে জানান তারা।

বৈঠকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।