কাপ্তাই হ্রদকে মৎস্য ভাণ্ডারে পরিণত করার কাজ চলছে

রাঙামাটিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি :

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদনে যে সমস্ত বাধা রয়েছে তা দূর ও হ্রদের ঐতিহ্য বাড়ানোর লক্ষে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মা মাছ ও ছোট মাছ ধ্বংসে যেসব জাল ব্যবহার করা হয়, সেসব জাল ব্যবহার করা যাবে না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান কঠোর। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদকে মৎস্য ভাণ্ডারে পরিণত করার কাজ চলছে।

তিনি শনিবার সকালে রাঙামাটিতে বিএফডিসি কার্যালয়ে কাপ্তাই হ্রদে বিএফডিসি কার্যক্রম অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, মিঠা পানির মাছ ও ইলিশ উৎপাদনে বিদেশেও দেশের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে এর নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমাদের সবসময় বলেন, কোন খাল, হাওর-বাওড় পরিত্যক্ত না রেখে মাছ উৎপাদনে মনোযোগ দিতে। করোনাকালীন অনেকে কর্মহীন হয়েছে সেই সকল মানুষকে কর্মসৃষ্টির জন্য সরকার কাজ করছে।

তিনি কাপ্তাই হ্রদের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, হ্রদের চারপাশে দখল করে বসতবাড়ি গড়ে উঠছে, একই সাথে অবৈধভাবে মা মাছ শিকারের ফলে কার্প জাতীয় মাছের সংখ্যা কমে আসছে দিন দিন। যেসব জাল দিয়ে মাছ ধরলে মাছের পোনা ক্ষতিগ্রস্ত এমন কোন জাল হ্রদে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। যারাই এই জাল ব্যবহার করবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্ত্রী বলেন, কাপ্তাই হ্রদে জেলেরা কি কি জাল ব্যবহার করবে তার পরিমাপ নির্ধারণ করা হবে এবং খাচায় মাছ চাষকে আমরা উৎসাহী করেছি এবং ক্রিক মাছ চাষের প্রকল্প একনেকে পাশ হয়েছে এর কার্যক্রম শুরু হলে পাহাড়ে মাছ চালে আমুল পরিবর্তন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইউস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াছিন মাহমুদ, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এককেএম মামুনুর রশিদ প্রমুখ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, অপার সম্ভাবনা থাকার পরও কাপ্তাই লেকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় মাছ আহরণে লক্ষ্যমাত্র পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা বিষয়গুলো জেনে নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা মাধ্যমে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় কাজ করবো এবং জাল ব্যবহারের নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। যাতে জালের মাছের পোনা ধ্বংস হয়ে না যায়।

জেলা মৎস্য অফিস ও মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র থেকে কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ এবং এর সমাধানের উপায়গুলো অবহিত করা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠান কেচকি জাল বা জিরো গিয়ারের জাল ব্যবহার নিষেদ্ধের দাবি করেন। কেচকি জাল বা জিরো গিয়ারের জাল ব্যবহারের ফলে কার্প জাতীয় মাছ ধংসের পথে। কাপ্তাই হ্রদের মাছের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই মাছের প্রজনন ক্ষেত্রগুলো আরো বিকশিত করতে হবে।

সভা শেষে মন্ত্রী ও সচিব অবতরণ ঘাট এবং জেলা মৎস্য অফিস ও মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন অফিস পরিদর্শন করেন।