কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :

প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক রোগীকে জোর করে সিজার করার জন্য অর্ধলাখ টাকা চাঁদা দাবি, প্রতারণা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) ডা. আসাদুজ্জামান, সি সাইড হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আনিসা, সি সাইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে একটি ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করা হয়েছে।
কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছরার কুতুব হাউসে বসবাসকারী সিরাজুল ইসলাম কোম্পানি এর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে মঙ্গলবার আদালতে ফৌজদারি দরখাস্তটি দায়ের করেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত নম্বর-৪ (কক্সবাজার সদর) এর বিচারক তামান্না ফারাহ্ ফৌজদারি দরখাস্তটি আমলে নিয়ে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ৭ সেপ্টেম্বর তৌহিদুল ইসলাম খোকন এর স্ত্রী ইফতেসাম আক্তারকে ডা. আসাদুজ্জামানের পরামর্শে ডেলিভারি করানোর জন্য কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পূর্বে অবস্থিত সি সাইড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তি করানোর সময় হাসপাতালের হিসাব শাখায় ৫ হাজার টাকা জমা করা হয়। একইদিন বিকেল ৫টার দিকে ডা. আনিসা নামক একজন মেডিক্যাল অফিসার এসে তার স্ত্রী ইফতেসাম আক্তারকে স্যালাইন দেন। রাত ৮টার দিকে ইফতেসাম আক্তারের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ডা. আসাদুজ্জামান, ডা. আনিসা, ডা. রফিকুল ইসলাম এসে ইফতেসাম আক্তারকে সিজার করানোর কথা বলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন বাদী তৌহিদুল ইসলাম খোকন তার স্ত্রীকে নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য তাদের অনুরোধ করেন। আসামি ৩ জন বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে অটল থাকে। আসামিদের কথায় বাদী রাজী না হওয়ায় আসামিরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর ইফতেসাম আক্তারকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেন। অনন্যোপায় হয়ে ইফতেসাম আক্তারকে সিসাইড হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ডুলাহাজারা মালুমঘাটে অন্য একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ৮ সেপ্টেম্বর সকাল প্রায় ১১টার দিকে ইফতেসাম আক্তারের নরমাল ডেলিভারি হয়। ফৌজদারী দরখাস্তে দ-বিধি ৪২০ (প্রতারণা), ৩৮৫ (চাঁদাবাজি) ও ৫০৬/বি (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এর অভিযোগ আনা হয়। ফৌজদারী দরখাস্তে ৩ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।
মামলার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট রমিজ আহমদ বলেন, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলাকে জোর করে সিজার করার জন্য চাঁদা দাবি করে চিকিৎসকগণ গর্হিত ও অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়েছেন।