কক্সবাজারে ধর্ষণকাণ্ড : প্রধান আসামিসহ আরও গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার মূল হোতা আশিকুল ইসলাম আশিককে মাদারীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গতকাল রোববার রাতে র‌্যাবের সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এদিকে এর আগে আরও ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। এর আগে অভিযুক্ত হোটেল জিয়া গেস্ট ইন এর ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৫ দলের সদস্যরা। তাকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত এই মামলার ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হলো।
গতকাল রোববার দুপুরে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান জানান, যাদের গ্রফতার করা হয়েছে তারা হলেন- কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ বাহারছড়া এলাকার রেজাউল করিম শাহাবুদ্দিন (২৫), চকরিয়ার ডুলাহাজারার উলুবনিয়া এলাকার মামুনুর রশীদ (২৮) ও কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বাহারছড়া এলাকার মেহেদী হাসান (২১)।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জবানবন্দিতে ওই নারী যাদের নাম বলেছেন, তাদের মধ্যে ৩ জনকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গেফতার করা হয়েছে।
এদিকে গত শুক্রবার দুপুরে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা ওই নারী কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তিনি জানান, তার ৮ মাস বয়সী শিশুর হার্টে ছিদ্র রয়েছে। তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা জোগাড় করতে তিনি কক্সবাজার এসেছেন। গত ৩ মাস ধরে শহরের অন্তত ৭টি হোটেলে অবস্থান করেছেন।
তিনি আরও জানান, তাকে বুধবার রাত ৮টার দিকে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আশিকের দুই বন্ধু তাকে ধর্ষণ করে। এরপর আশিক তাকে আবার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায় কলাতলী এলাকার জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। তাকে নিয়ে ওই হোটেলের একটি কক্ষে উঠেন আশিক। তবে সেখানে তাকে ধর্ষণ করার সুযোগ পাননি আশিক। তার আগেই একটি ফোন কলে পুলিশের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে আশিক কক্ষ থেকে চলে যান। তিনি হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে পর্যটন মোটেলের সামনের সড়কে আসেন। সেখানে স্বামীকে দেখতে পান র‌্যাবের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে। র‌্যাব তাকে নিয়ে হোটেল জিয়া গেস্ট ইন এ আসে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন, আগের দিন বুধবার বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে তারা বেড়াতে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন।
এরপর তাকে নেওয়া হয় কলাতলীতে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা। পরে র‌্যাব এসে তাকে উদ্ধার করে।