এক হাজার টন বর্জ্য থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন

মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগ বেড়েছে। যার ফলে আগের তুলনায় অধিক পরিমাণে ময়লা-আবর্জনা উৎপন্ন হচ্ছে। আর এসব বর্জ্য শুধু শহরে নয়; বরং গ্রামগঞ্জেও উৎপন্ন হচ্ছে। আগের তুলনায় অধিক মাত্রায় বর্জ্য উৎপন্ন হওয়ায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পৃথিবীর অনেক দেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন মডেল আছে। উন্নত দেশের মডেল অনুসরণ করে আমাদের দেশেও অনুরূপভাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে আমাদের দেশের জন্য কার্যকর মডেল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেহাতই সময়ের দাবি।
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অন্তত এক হাজার টন বর্জ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বর্জ্য ব্যবহার করে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্য থেকে সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। উন্নত দেশে দেখা অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান চট্টগ্রামের মেয়র। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার ‘চট্টগ্রাম নগরীতে সমন্বিত বর্জ্য শোধনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ আশাবাদের কথা জানান।
জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দুটি জাপানি কোম্পানি, জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং ইয়চিও ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন একটি সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে। সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন দৈনিক এক হাজার টন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে তা থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব করেছে। জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন একটি বৃহৎ অবকাঠামো কোম্পানি যা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুসহ পরিবেশ সংক্রান্ত অনেকগুলো বড় প্রকল্পে কাজ করছে। ইয়াচিও ইঞ্জিনিয়ারিং বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বহু বছর ধরে জাইকার সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে সহযোগিতা করে আসছে। চসিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ফলাফল বাস্তবায়নের জন্য অভিপ্রায় পত্র জারি করেছে।
চসিকের সহযোগিতায়, জাপানি দলটি ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের প্রস্তাব তুলে ধরে। দলটি বিদ্যমান বর্জ্য শোধনাগারের যথাযথ ব্যবস্থাপনারও প্রস্তাব করেছে।