উখিয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাসীন প্রশাসন

হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া :

উখিয়ার হাটবাজার, স্টেশনসহ ব্যস্ততম এলাকায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের উচ্ছিষ্ট বা বর্জ্য ফেলার মতো পরিসর নিয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এমতাবস্থায় হাটবাজার ইজারাদাররা তাদের বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে বিষাক্ত বর্জ্য রাখছে। এতে করে এলাকার সার্বিক পরিবেশ বিপন্নের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী সচেতনমহল। প্রশাসন বলছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফেলা বর্জ্য রাখার মতো একটি স্থায়ী জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

সরেজমিন ঘটনাস্থল উখিয়ার ব্যস্ততম সড়ক ফরেস্ট রোড ও উপজেলা গেটের সামনে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাটবাজার, স্টেশন ও লোকালয় ও বাসাবাড়ির নানারকম উচ্ছিষ্ট ও বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এখানে। দীর্ঘস্থায়ী এসব বর্জ্য থেকে মশা-মাছির উৎপত্তি ও বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে বলে দাবি করে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে লোকালয়ে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্যের কারণে এলাকার পরিবেশদূষণের পাশাপাশি কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে আশংকাজনকহারে। তিনি অবিলম্বে বর্জ্য সংরক্ষণের সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

রাজাপালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সরওয়ার কামাল পাশা বলেন, এখানে প্রায় ২ শতাধিক এনজিও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেবা কার্যক্রম চালায়। এসব এনজিওর কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত সড়কপথে আসা-যাওয়াকালে এসব বর্জ্য দেখলেও না দেখার ভান করে চলে যান। অথচ তারা ইচ্ছা করলে যেকোনো মুহূর্তে এসব বর্জ্য অপসারণসহ একটি বর্জ্য শোধানাগার প্রকল্প হাতে নিতে পারেন।

উখিয়া বঙ্গমাতা ফলিজলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন জানান, কলেজে আসার একমাত্র সড়কপথ ফরেস্ট রোড ব্যবহার করে তার শিক্ষাঙ্গনে শত শত ছাত্রী প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছে। তাদের অভিযোগ, পথিমধ্যে বিশাল বর্জ্যের স্তূপ থেকে নির্গত পচা দুর্গন্ধে তাদের শরীর খারাপ হয়ে যায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, যে দুটি স্থানে নিয়মিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, এতে বৃহত্তর লোকজন জড়িত। এসব বর্জ্য সংরক্ষণ বা নির্ধারিত স্থানে ফেলার জন্য উপজেলা পরিষদে অতিরিক্ত কোনো বরাদ্দ না থাকলেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আশ^াস দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বর্জ্যরে ব্যাপারে অবগত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পরিত্যক্ত কোনো স্থানে বর্জ্য ফেলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে তা কার্যকর করা হবে।