আমাজনকে যেভাবে টিকিয়ে রেখেছে ১০ লাখ প্রজাতির ছত্রাক

সুপ্রভাত ডেস্ক :
রেইন ফরেস্টে প্রায় সারা বছরই আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করে। যা ধ্বংসস্তূপের উপর সহজেই জীবনের উত্থান ঘটায়। এসব জীবনের মাঝে ছত্রাক সবচেয়ে বেশি পরিমাণে জন্মায়। মাশরুমগুলো ছত্রাকের ক্ষুদ্র ফলজ দেহ। মাটির নিচে ছত্রাকের বিশাল নেটওয়ার্ক আমাদের দৃষ্টির বাইরে। ছত্রাক খুব সহজেই মৃতদেহগুলোর পচন ঘটায় এবং মাটির নিচের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন গাছে খুব দ্রুত পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেয়।
রেইন ফরেস্টে এই প্রক্রিয়া ঘটে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে। এখানে প্রায় ১০ লাখ প্রজাতির ছত্রাকের বসবাস। এগুলোর অধিকাংশের বৈশিষ্ট্যই বিজ্ঞানের কাছে এখনো অজানা।
তবে একটি বিষয়ে বিজ্ঞান নিশ্চিত, ছত্রাক ব্যতীত রেইন ফরেস্ট কখনো টিকে থাকতে পারত না। ছত্রাক শুধু মৃত জীবের দেহেই জন্মায় না, কিছু ছত্রাকের জীবনচক্র আবর্তিত হয় জীবন্ত প্রাণীদের ধ্বংসের মধ্য দিয়ে।
এগুলো করডিসেপ্স ছত্রাক নামে পরিচিত। এসব ছত্রাক পতঙ্গবিশেষ প্রাণীদের দেহে বাসা বাঁধে। অতঃপর পতঙ্গের মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তৈরি করে জম্বি। এ অবস্থায় পতঙ্গের নিজের কোনো ইচ্ছাই কার্যকর নয়। ছত্রাক পতঙ্গকে সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করতে বাধ্য করে।
কিছুদিনের মধ্যেই পতঙ্গের দেহ থেকে ছত্রাকের ফলজ দেহের উত্থান ঘটে। এই ফলজ দেহের মাধ্যমেই ছত্রাক স্পোর ছড়িয়ে দেয়। স্পোরগুলো বাতাসে ভেসে নতুন পতঙ্গদের আক্রান্ত করে।
পৃথিবীতে হাজার হাজার প্রজাতির ফাঙ্গাস রয়েছে। বিস্ময়করভাবে, প্রতিটি করডিসেপ্স একটি মাত্র পতঙ্গকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা অর্জন করেছে।
নিষ্ঠুর হলেও, জঙ্গলের জন্য এই আক্রমণগুলো সুফল বয়ে আনে। করডিসেপ্স ছত্রাক জঙ্গলের পতঙ্গের সংখ্যায় ভারসাম্য বজায় রাখে। কোনো পতঙ্গ সংখ্যায় বেড়ে গেলে, বেড়ে যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।