সুপ্রভাত ডেস্ক »
এ বছর শীতের মধ্যেই করোনার নতুন একটি ভ্যারিয়্যান্ট বিশ্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে শুক্রবার সতর্ক করল ফ্রান্স।
গত বছর প্রথম ঢেউয়ের পর থেকে দ্রুত মিউটেশন ঘটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একের পর এক স্ট্রেন তৈরি করেছে করোনাভাইরাস। সম্প্রতি ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটে বিশ্বে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। এসে গিয়েছে তৃতীয় ঢেউ। ফ্রান্স অবশ্য জানিয়েছে তারা চতুর্থ ঢেউয়ের মুখে। এ দিন ফরাসি সরকারের বিজ্ঞান পরিষদের শীর্ষ কর্তা জঁ-ফ্রাঁসোয়া দেলফ্রেসি শীতের মধ্যেই নতুন ভ্যারিয়্যান্টের আগমন বার্তা জানিয়ে সতর্ক করেছেন। তবে নতুন ভ্যারিয়্যান্ট কতটা সংক্রামক হবে, ডেল্টার থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে কিনা সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। ফ্রান্সের মানুষকে আগের মতোই মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দেলফ্রেসির মতে, ‘আগের মতো স্বাভাবিক’ জীবনে ফিরতে ২০২২ বা ২০২৩ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘পরের কয়েক বছরে পৃথিবীটা দু’দলে ভাগ হয়ে যাবে। এক দল দেশ যারা টিকা পেয়েছে ও যারা টিকা পায়নি। এই দুই পৃথিবীর মধ্যে সমন্বয় রেখে চলাই আগামী দিনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’’ চতুর্থ ঢেউ সামাল দিতে ইতিমধ্যে ‘হেলথ্ পাস’ ব্যবস্থা চালু করেছে ফরাসি সরকার। বুধবার থেকে সিনেমা, জাদুঘর, সুইমিং পুল, ময়দান-সহ যে কোনও প্রকাশ্য স্থানে যেতে গেলে হয় কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট বা টিকাকরণের সার্ঢিফিকেট দেখাতে হচ্ছে। রেস্তরাঁ, ক্যাফেতে এই পাস চালু করতে এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিযুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে টিকাকরণ নিশ্চিত করতে আজ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে খসড়া আইন পেশ করা হয়েছে। তবে দেশবাসীর একটা অংশ নতুন কড়াকড়িতে ত্যক্ত বিরক্ত। তাঁরা কোভিড-বিধি লাঘব করার দাবিতে প্যারিস-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
এ দিকে সিডনিতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমণ ঘটেছে। করোনা এতটাই ছড়িয়েছে যে আজ সেখানে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। সে দেশে মাত্র ১২ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। পর্যাপ্ত টিকাকরণের অভাবেই যে অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমণ হুহু করে বাড়ছে তা মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। গত কাল এ নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে, টিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নতুন সম্ভাবনার কথা জানালেন ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক জানিয়েছেন, ফাইজ়ারের টিকার দু’টি ডোজ়ের ব্যবধান তিন সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে অন্তত আট সপ্তাহ করলে শরীরে দ্বিগুণ পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এবং অনেক দিন পর্যন্ত তা কার্যকর থাকে। তবে সময়ের ব্যবধান কম হোক বা বেশি উভয় ক্ষেত্রেই কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। দু’টি ডোজ়ের মধ্যে সময়ের ফারাক কম থাকলে অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা বাড়ে। অন্য দিকে সময়ের ব্যবধান বেশি হলে শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সুত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা