১৯৭১-এর গল্পে অজয়-সোনাক্ষি

সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) মুক্তি পেয়েছে অজয় দেবগণের ‘ভুজ: দ্য প্রাইড অব ইন্ডিয়া’। সিনেমাটির প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগ; যখন বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে ভারতীয় বিমানবাহিনী।
মূলত ভারতীয় বিমান সেনাদের স্কোয়াড্রন লিডার বিজয় কর্ণিকের গল্প নিয়েই তৈরি এটি। পাশাপাশি উঠে এসেছে ৩০০ গুজরাটি মহিলার আত্মত্যাগের কাহিনি।
ছবিটির মূল চরিত্র বিজয় কর্ণিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অজয় দেবগণ। সঙ্গে আছেন সঞ্জয় দত্ত, সোনাক্ষি সিনহা, নোরা ফাতেহিসহ অনেকে। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন অভিষেক দুধিয়া।
১৯৭১ সালের ৩ থেকে ১৭ ডিসেম্বর- এ সময়কালের ঘটনা এটি। গুজরাটের ভুজ এয়ার বেসের রানওয়ে পাকিস্তানিরা ৯২টি বোমা আর ২২টা রকেট ফায়ার করে নষ্ট করে দেয়।
যেন ভারতীয়রা বাংলাদেশিদের সমর্থন করে এয়ার হামলা করতে না পারে। ওই এলাকার সাধারণ মানুষ তখন প্রাণ বাঁচাতে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে সরে যাচ্ছিলেন।
ভুজ এয়ার বেসের রানওয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ভারতীয় বিমান সেনা জামনগর এয়ার বেস থেকেই অপারেট করছিলেন। কিন্তু ভুজ পাকিস্তান সীমান্তের অনেক কাছে বলে এই এয়ার বেসকে আবার সক্রিয় করাটা খুব জরুরি হয়ে পড়ে।
বিজয় কর্ণিকের সঙ্গে বিমানবাহিনীর দু’জন কর্মকর্তা, ৫০ জন সৈনিক আর ৬০ জন ডিএসসি ছিলেন। কিন্তু এ জনবল দিয়ে রানওয়ে ঠিক করাটা অসম্ভব। স্থানীয় গ্রামের মানুষের সঙ্গে কর্ণিক আলোচনা করলেও বোমা হামলার ভয়ে কেউ সাহায্য করেনি। পরে পার্শ্ববর্তী মাধাপারের ৩০০ মহিলা জীবনবাজি রেখে এতে সামিল হয়। পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর টহলদারি বিমান থেকে বাঁচতে স্কোয়াড্রন লিডার ওই মহিলাদের সার্ভাইভাল ড্রিল শিখিয়ে দেন। শত্রু বিমান আসার অ্যালার্মের আওয়াজ শুনলেই সব কাজ ছেড়ে রানওয়ের পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে পড়তেন ওই বীরাঙ্গনারা। টানা ৭২ ঘণ্টা দিন-রাত অমানবিক পরিশ্রম শেষে ঠিক হয়ে যায় রানওয়ে। এরপরই ভারতীয় বিমানসেনা আক্রমণ শুরু করে পাকিস্তানিদের উদ্দেশে। যার ফলে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি এয়ারফোর্স।
এক ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের এই ছবি মূলত কর্ণিকের বীরত্ব-গাঁথা। মুক্তির পর ছবিটি প্রশংসা যেমন পেয়েছে তেমনি এর নির্মাণ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
ভারতীয় পত্রিকার ভাষায়, ‘দেশপ্রেমকে তোল্লাই দিতে গিয়ে লজিক গড়াগড়ি খেল মাটিতে। চিত্রনাট্যে ইমোশনের পাক রান্নায় গরম মশলার অতিরিক্ত ব্যবহারের মতোই রান্নাকে তেতো করে ফেলেছে। ছবি যুদ্ধের গল্প দিয়ে শুরু হলেও আচমকা গতির সঙ্গে সঙ্গে খানিক খেইও হারিয়ে ফেলে।’
তবে প্রশংসা করা হয়েছে যুদ্ধের দৃশ্যায়ন, লাগাতার বোমা-বৃষ্টি, পাক বিমানের হামলা দৃশ্যের। ধাক্কা দিয়েছে সারি সারি জ্বলন্ত চিতায় হাজার হাজার সৈনিকের দেহের অন্ত্যেষ্টি। কলের জলে মুখ ধুতে গিয়ে জলের বদলে রক্ত বেরিয়ে আসার দৃশ্যও দাগ কেটে যায়। বলা হচ্ছে, যুদ্ধের গন্ধে ম-ম করা থ্রিলার উপহার পান দর্শকেরা।
সূত্র: কইমই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস