সচেতনতার মাধ্যমে মরণব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

অ্যাডভোকেসি সভা

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেছেন, পানিবাহিত রোগ, হেপাটাইটিস ও ক্যান্সার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরূপ। নিরাপদ পানির অভাবে অসংখ্য মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। স্যুয়ারেজ সিস্টেমে পানি লিকেজের কারণে গত বছর নগরীর হালিশহর এলাকায় পানি দূষিত হয়। ফলে সেখানে হেপাটাইটিস, কলেরা ও ডায়রিয়া দেখা দিয়েছিল। স্বাস্থ্য বিভাগের নিরলস প্রচেষ্টায় তা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। সুস্থ থাকতে হলে সকলকে পানি ফুটিয়ে পান করার পাশাপাশি রান্না-বান্না ও অন্যান্য কাজে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতসহ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আমরা যেভাবে সক্ষম হয়েছি ঠিক তেমনি সর্বত্র জনসচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে মরণব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত জনগণের মধ্যে হেপাটাইটিস, পানিবাহিত রোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা প্রচারণার বিষয়ক অ্যাডভোকেসি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর লাইফ স্টাইল, হেলথ এডুকেশন অ্যান্ড প্রমোশনের সহযোগিতায় কনসালটিং ফার্ম বর্ণমালা কমিউনিকেশন লিমিটেড এ সভার আয়োজন করে।
জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসি সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরর সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, ডেপুটি চিফ (টিএসডি) অ্যান্ড প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ডব্লিউএইচও) মো. মোখলেছুর রহমান, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ হাসান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার, মেডিক্যাল অফিসার (প্যাথলজি) ডা. আবু সাদাত মো. শিহাবউদ্দিন, মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. নওশাদ খান ও সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ। সিভিল সার্জন কার্যালয় ও জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্যকর্মীরা অ্যাডভোকেসি সভায় অংশ নেন। কর্মশালার মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, নিরাপদ পানির অভাবে প্রতিবছর বিশ্বে পানিবাহিত রোগে ১৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় ও ৮ লাখ ৪২ হাজার মানুষ অকালে মারা যায়।
অন্যদিকে, বিশ্বে ২০০ ধরণের ক্যান্সার রয়েছে যার কারণে প্রতিবছর লাখো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। পরিসংখ্যানে বলছে, প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে এসব জঠিল রোগ প্রতিরোধ সহজ হবে। সভায় ক্যান্সারের কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হয় তার মধ্যে বয়স, খাবার, জীবনযাপনের ধারা, পারিবারিক ইতিহাস, পরিবেশ ও পেশাগত কারণ অন্যতম। আর মরণ এ ব্যাধি প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা ধূমপান সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করা, সুষম খাবার গ্রহণ, আর্সেনিকমুক্ত পানি পান, নিয়মিত হাঁটাচলা, ব্যায়াম, ভেজাল ও নি¤œমানের কসমেটিক পরিহার, দীর্ঘ সময় সরাসরি সূর্যের নীচে না থাকা, বেশ কিছু জীবানুর বিরুদ্ধে টিকা গ্রহণ, পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে বায়ু ও পানিদূষণ বন্ধ করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বিজ্ঞপ্তি