মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ দ্রুত শুরু হোক

নামে বাণিজ্যিক রাজধানী হলেও রাজধানী ঢাকার তুলনায় সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে চট্টগ্রাম। নানা কথা, নানা আশ্বাস দেওয়া হলেও বৈষম্যটি দিনদিন প্রকট থেকে প্রকটতর হয়ে উঠছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে চট্টগ্রামের বঞ্চনা উল্লেখ না করে পারা যায় না। ঢাকায় অনেকগুলো সরকারি- বেসরকারি এবং বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামের ব্যাপারে উদাসীনতা সীমাহীন।
চট্টগ্রামে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সীমিত। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল এ দুটো ছাড়া বৃহত্তর চট্টগ্রামে আর বড় কোনো চিকিৎসাকেদ্র নেই। এ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর হতাশা ও ক্ষোভেরও শেষ নেই। তাই তারা এখানে চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধি ও বিশেষায়িত হাসপাতালের দাবি জানিয়ে আসছে অনেক দিন ধরে।
এরমধ্যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল অন্যতম। আশার সংবাদ হলো শেষ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পে ১২’শ শয্যার হাসপাতালসহ নানা অবকাঠামো উন্নয়নে ১ হাজার ৮৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এ প্রকল্পের আওতায় ১৫তলা হাসপাতাল ভবন, প্রশাসনিক, একাডেমিক ও ডিনস অফিসসহ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ক্যাফটেরিয়া, টিএসসি, প্রার্থনাকক্ষ, কনভেনশন হল এবং টিচার্স ক্লাব/ লাউঞ্জ, ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার, ডক্টরস এবং অফিসার্স কোয়ার্টার,শিক্ষার্থীদের হোস্টেল, আইএইচটি শিক্ষার্থী ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পৃথক হোস্টেল ও নার্সেস ডরমিটরি।
এতে চিকিৎসকদের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটসহ কোর্স চালুর জন্য ১০ ফ্যাকাল্টিসহ ৬৯টি চিকিৎসা বিভাগ থাকবে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত।
সীতাকু-ে ফৌজদারহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সংলগ্ন ২৩ দশমিক ৯২ একর জমি হাসপাতালসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা আছে। ২০১৭ সালের ১৭ মে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডাক্তার মো. ইসমাইল খানের যোগদানের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস এবং বিএসসি অনার্স ইন নার্সিং ও বিইউএমএস (ব্যাচেলর অব ইউনানি মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্সের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হয়। এসব শিক্ষার্থীরা আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হত।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি হাসপাতালটি নির্মিত হলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা ছাড়াও ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর এমনকি কুমিল্লার রোগীরাও স্বাস্থ্যসেবা পাবে। আমরা আশা করব এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ হাসাপাতালের নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে নির্ধারিত সময়ে শেষ করবে কর্তৃপক্ষ।