মহাসড়ক যেন পৌরসভার বর্জ্যাগার

নাকাল এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগড় »

খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড মাস্টারপাড়া এলাকায় মহাসড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য। এতে শিক্ষার্থী, প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকজন,পথচারী,যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষেই জমানো হচ্ছে এই বর্জ্যের স্তুপ। কর্মস্থলে নাকে রুমাল চেপে কাজ করতে হয় জনস্বাস্থ্য প্রকোশলী অধিপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। বর্জ্য অপসারণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রামগড় পৌরসভা। কাগজে কলমে দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌরসভা এটি। প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ১৭ বছর ধরে সড়কের পাশেই ফেলছে পৌরসভার এসব বর্জ্য। বৃষ্টি হলেই এসব আবর্জনা নোংরা পানির সাথে সড়কে গড়িয়ে পড়ছে।
দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি- ফেনী মহাসড়কের পাশ ঘেঁষেই রামগড় পৌরসভার মাস্টার পাড়া এলাকায় ফেলা হচ্ছে পৌরসভার সমস্ত বর্জ্য। তার পাশেই রয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আবর্জনার স্তুপ থেকে ২০০গজ দূরেই অবস্থিত উপজেলার একমাত্র কলেজ, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এবং সমাজসেবা অফিস এবং কৃষি অফিস।
ফলে এই ময়লার সঙ্গে বসবাস করেই দৈনন্দিক কাজ কর্ম করতে হয় ভুক্তভোগীদের। রামগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের উপ সহকারি প্রকৌশলী দীপ শিখা চাকমা জানান, নাকে রুমাল চেপে ধরেও কর্মস্থলে কাজ করা যায় না। উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। এবার লিখিত আবেদন করবেন বলে জানান তিনি। মাস্টারপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সুমন জানান,আবর্জনার দুর্গন্ধে পরিবার নিয়ে এই এলাকায় বসবাস করাটাই বড় দায়। বর্জ্য ফেলার স্থান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত নাকে রুমাল চেপে চলতে হয় বলে জানান তিনি। রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম জানান, পৌরসভার কাজ হচ্ছে পরিবেশ সুন্দর রাখা। অথচ সড়কের পাশে ময়লা ফেলে তারাই পরিবেশ নষ্ট করছে। দুর্গন্ধে কলেজ যেতে কষ্ট হয়। স্থানীয় সংবাদ কর্মী ও পরিবেশবিদ করিম শাহ জানান, মহাসড়কের পাশে পৌরসভার আবর্জনা ফেলা উচিত নয়। আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট একটি খোলা স্থান নির্ধারণ করা উচিত।
এখানে কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যালয় রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ যত্রতত্র ময়লা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে শিশুরাও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। রামগড় পৌর সভার প্যানেল মেয়র ও ৫নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর আহসান উল্লাহ জানান, এবছর বজ্যের্র পরিমাণ বেশি হওয়ায় দুর্গন্ধের পরিমান বেড়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা পৌর কর্তৃপক্ষকে আরো আগে জানালে ব্যবস্থা নেয়া যেতো। সমস্যা সমাধানের জন্য জায়গা দেখা হচ্ছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান,মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলার নিয়ম নেই। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।