ভারতও চায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত প্রত্যাবসান

প্রেস ক্লাবে ভারতের রাষ্ট্রদূত দোরাইস্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন ভারতও চায়। মিয়ানমার থেকে আসা লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এটা প্রশংসার দাবি রাখে। গতকাল রোববার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এ কথা বলেন।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, আমি বাংলা বুঝতে পারলেও এখনো সঠিকভাবে বাংলা বলতে পারি না। বাংলা ভাষা শিখছি, সামনে পুরোপুরি শিখে যাবো।
চট্টগ্রাম চারশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের গেটওয়ে উল্লেখ করে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, চট্টগ্রামের সোনালী অতীত রয়েছে। ভবিষ্যতের হিসেবে অর্থনৈতিক দিক থেকে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বেশি। চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান এবং এর উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী ও ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের পর রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে দোরাইস্বামী বলেন, এটা একদম পরিষ্কার আমরা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন চাই। সবক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা থাকবে। তাদের ফিরিয়ে নেয়া বাংলাদেশের সমাজ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বলেও মন্তব্য করেন দেশটির রাষ্ট্রদূত দোরাইস্বামী।
সীমান্তে হত্যা নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, সীমান্তে অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ৯৫ শতাংশ ঘটে ভারতের সীমান্ত এলাকায়। ৮৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে রাত দশটার পরে। এসময় অবৈধ অনুপ্রবেশও ঘটে। এসব ঘটনা বন্ধে সীমান্তে বৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ আলী আব্বাস প্রেস ক্লাব পরিদর্শন করে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী জাদুঘর করার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কারণে ভারত গমনের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী সঙ্গীতা দোরাইস্বামী, ভারতীয় দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি দীপ্তি আলংঘট, চট্টগ্রামস্থ ভারতের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের দ্বিতীয় সচিব শুভাশিষ সিনহা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজুসহ অন্যন্যা কর্মকর্তারা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।