ভবন ভাঙতে গিয়ে ধস, দুজনের মৃত্যু

জামালখান

নিজস্ব প্রতিবেদক »

জামালখানে পুরানো ভবন ভাঙতে গিয়ে ধসের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল চারটায় জামালখান সিকদার হোটেলের পাশে রতন ভট্টাচার্যের পুরোনো ভবনের কার্নিশ ধসে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মো. জসিম উদ্দিন এবং রণ চক্রবর্তী (৫৫)। ওই ভবন ভাঙার কাজ পাওয়া ঠিকাদারের সুপারভাইজার জসিম ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রণ চক্রবর্তী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সৌমেন ধর বলেন, ‘১০ দিন ধরে একটি পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার কাজ চলছিল। মাঝখানে কয়েকদিন বন্ধও ছিল। আগে বাঁশ দিয়ে নেট টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু পরে তারা আর কোনো নেট দেয়নি। ছিল না কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা। বিকেলে ভবনটির উপর একটি অংশ ধসে পড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ভবন ধসের ঘটনায় ছুটে আসেন জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। ভবন ভাঙার কাজে কোনো নিরাপত্তা বলয় না রাখা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ভবন ধসের ঘটনায় আরও মানুষের মৃত্যু হতে পারতো। ভবন মালিকের অবশ্যই সেফটি গার্ড রাখা দরকার ছিলো। কিন্তু ভবন মালিক এটি কেন রাখেন নি তা বুঝতে পারছি না। আগামীতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে আমি চেষ্টা করবো।’

চমেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক আশেক বলেন, ‘জামালখানের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মো. জসিমের (৪১) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই। তার মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। আর রওনক চক্রবর্তী (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, মো. জসিম ফটিকছড়ি উপজেলার আব্দুল খালেকের ছেলে। রণ চক্রবর্তী সাতকানিয়ার কালিয়াইশ মৌলভীর দোকান এলাকার দুলাল চক্রবর্তীর ছেলে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ভবনটি ভাঙার সময় কোনো প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফুটপাতে চলাচলের জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতাও দেওয়া হয়নি। যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবদুল হালিম জানান, ভবনটি ভাঙার কাজ চলছিল। ভেতরের অংশ ভেঙে ফেলা হয়। বাইরের দেয়াল ও কার্নিশটি ছিল। বিকেলে হঠাৎ কার্নিশটি ধসে পড়লে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ভবনের ভেঙে পড়া অংশ অপসারণ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মালিক নিজেই ঠিকাদার নিয়োগ করে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে ভবন ভাঙার কাজ করছিলেন। দোতলার বাইরের কিছু অংশ ফুটপাত ও সড়কে গিয়ে পড়ে। আহত ও নিহত দুজনই ওই সময় ফুটপাতে ছিলেন।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জামাল খানের ওই দোতলা ভবনের লাগোয়া আরো একটি দোতলা ভবন এবং অন্যপাশে চারতলা একটি ভবন রয়েছে।

কোতয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবীর জানান, ঘটনার পর ওই ভবন মালিক বা তাদের সংশ্লিষ্ট কউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।

জামালখান এলাকার ওই সড়কে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিনই সকালে ও বিকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকরা ফুটপাত দিয়ে যাওয়া-আসা করে থাকেন।