বৈসাবি বরণে বর্ণিল শোভাযাত্রা রাঙামাটিতে

চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নাহওয়ায় হতাশা সন্তু লারমার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু) বলেছেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পরও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের মানুষ হতাশা, গ্লানি নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করছে। যে আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল আজো সেই আকাক্সক্ষা পূরণ না হওয়ায় জুম্ম জনগণের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।’ তিনি অবিলম্বে চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার সকালে রঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে রাঙামাটি বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
এদিন আনন্দ ও উচ্ছাসে রাঙামাটিতে বের হয় বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান্ত, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। প্রতিবছর এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে মূলত বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পাহাড়িরা এতে অংশ নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসা এই শোভাযাত্রায় নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরেন। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক গায়ে দিয়ে তাদের সংস্কৃতি তুলে ধরে। আনন্দ-আমেজে বৈসাবির উপলক্ষ সবার কাছে পৌঁছে দেয় এই শোভাযাত্রা।
রাঙামাটি বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, জাবারং এর নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পঞ্চানন ভট্টাচার্য, রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজীব চাকমাসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
এ সময় বক্তারা বর্ষবরণ ও বিদায়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম সংস্কৃতিতে রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ এবং একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। আনন্দের উচ্ছ্বাসের এই সময়েও উদ্বেগ, উৎকন্ঠা আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে উৎসব পালন করতে হয় বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
এ সময় রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাঙামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।