বায়ুদূষণের কবলে নগরী

সীমাহীন দুর্ভোগ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে উড়ছে ধুলোবালি। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এ জন্য নগরীর বাসিন্দারা দুষছেন উন্নয়ন কর্মকা-ে নিয়োজিত সেবা সংস্থাগুলোকে।

একটি স্থানীয় দৈনিকের রিপোর্ট থেকে জানা যায় নগরের লালখান বাজার মোড় থেকে টাইগারপাস মোড় এবং অক্সিজেন-মুরাদপুর সড়কে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজারো যাত্রীসাধারণ এবং পথচারীদের নাকাল হতে হচ্ছে ধুলোবালিতে। একদিকে ফ্লাইওভারের কাজ, অন্যদিকে ওয়াসার পাইপ লাইনের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির ফলে মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়ক ধুলোর স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতার কাজের জন্য ড্রেন থেকে তোলা কাদামাটি শুকিয়ে পুরো সড়ক ধুলোয় ধূসর হয়ে পড়েছে। এর মধ্য দিয়ে যাতায়াতের সময় শ্বাস নেয়াই যেন দায় হয়ে পড়েছে যাত্রী ও পথচারীদের।

নগরবাসীর অভিযোগ, ভাঙা রাস্তার ভোগান্তি তো আছেই। এখন ধুলোর কষ্ট মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে গেছে। পাশাপাশি যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও শব্দ নগর জীবন বিষিয়ে তুলেছে। এতে নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।

আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে লালখান বাজারের দিকে নামার পথে বালির স্তূপে পুরো এলাকা ধুলোময় হয়ে রয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অফিসগামী লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন। সামনে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে এসব এলাকায় কাদামাটি আর পানিতে দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। একই অবস্থা মুরাদপুর-অক্সিজেন রোডেও। এখানে ওয়াসা পাইপ লাইনের জন্য কিছু এলাকা কেটেছে। অন্যদিকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ড্রেনের কাজ করতে গিয়ে ড্রেন থেকে মাটি তুলে রাস্তার উপর রাখার ফলে মাটিগুলো শুকিয়ে প্রতিনিয়ত ধুলোবালি তৈরি করছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘর থেকে বের হলেই নাকে-মুখে ঢুকছে ধুলোবালি। এতে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা। অনেক রাস্তায় ধুলোবালির পরিমাণ এতটাই বেশি যে নাকে-মুখে রুমাল চেপে কিংবা মাস্ক পরেও রক্ষা মিলছে না। একদিকে ভাঙা রাস্তা, অন্যদিকে ধুলো। এ দুইয়ের মাঝে পড়ে পথচারীসহ স্থানীয়দের যেন ত্রাহি অবস্থা।

এই শহরের বায়ুদূষণের জন্য বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ে নিয়োজিত সেবা সংস্থাগুলো যেমন দায়ী, তেমনি গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়া ট্রাফিক বিভাগ ও বিআরটিএ’রও দায় আছে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে সব সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে।

ঢাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরিবেশ অধিদপ্তর উন্নয়ন কর্মকা-ের নামে বায়ুদূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করলেও চট্টগ্রামে সেই ধরনের কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে।