প্রদীপসহ ছয় আসামির জামিন আবেদন নাকচ

মেজর সিনহা হত্যা মামলার বিচার শুরু; সাক্ষ্যগ্রহণ ২৬, ২৭, ২৮ জুলাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
চার্জগঠনের মধ্যদিয়ে বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার আলোকে আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গতকাল রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সাক্ষ্য গ্রহণের এই আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলার ১০ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে সমন জারি মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতসহ ছয়জন আসামির জামিন আবেদন নাকচ করেন আদালত।
অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ওসি প্রদীপসহ মামলার ১৫ জন আসামি। আসামিদের আদালতে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফরিদুল আলম এবং বাদিপক্ষে আইনজীবীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পিপি ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার চার্জ গঠনের শুনানির দিন ছিলো ২৭ জুন রোববার। তার জন্য ওসি প্রদীপসহ মামলার ১৫জন আসামিকে পৌনে ১১টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আদালতে তোলা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আদালত শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ চার্জগঠনের যুক্তিতর্কে অংশ নেন। আসামি পক্ষে অংশ নেন প্রখ্যাত আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত, চন্দন দাশসহ অন্তত ২০ জন আইনজীবী।
বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন আমলে নিয়ে এবং আসামিপক্ষের চার্জগঠনের বিরোধিতার আবেদন খারিজ করে চার্জ গঠন করেন। একই সাথে সাক্ষগ্রহণের দিন ধার্য করেন।
অন্যদিকে ওসি প্রদীপকে মামলা থেকে অব্যাহতি এবং তিনিসহ ছয় আসামির জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। সেই আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত।
আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেছেন, চার্জসিটে সিনহা হত্যায় ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে বুট জুতা দিয়ে হত্যার কথা বলা হলেও এজাহারে এই অভিযোগ নেই। সুরতহাল প্রতিবেদন, তদন্ত প্রতিবেদনেও প্রদীপের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ নেই। তাই আমরা তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলাম।
গত ৯ জুন নন্দ দুলাল ও ১০ জুন ওসি প্রদীপের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। তবে দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় পলাতক থাকার পর বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন কনেস্টবল সাগর দেব। আদালত তিনজন আসামির আবেদন করা জামিন শুনানির জন্য রোববার ২৭ জুন নির্ধারণ করেন। শুনানি শেষে ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তায় পুনরায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য , আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।
আদালতসূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে আনা হয়েছিল।
মামলায় গ্রেফতার ১৪ আসামিকে র‌্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।