নবী-ওলীদের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীরা পথভ্রষ্ট

শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা

মহাত্মা নবী রাসূল সাহাবা ও আউলিয়ায়ে কেরামের বিরুদ্ধে যারা বিষোদগার ও কটূক্তি করে তারা বড়ই দুর্ভাগা, পথভ্রষ্ট ও ঈমানহারা। যারা আহলে বায়তে রাসুলের (দ) অতুলনীয় শান মর্যাদার ওপর কালিমা লেপন করতে চায় তারা সত্য পথ থেকে বিচ্যুত ও ভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্লাজায় দশদিন বাপী কারবালা মাহফিলের গতকাল ছিল ষষ্ঠ দিন। এদিন দেশি-বিদেশি আলোচক ও ইসলামী চিন্তাবিদরা আহলে বায়তে রাসূল (দ) সহ নবী রাসূল মহাত্মা সাহাবা ও আউলিয়ায়ে কেরামের শান মর্যাদা নিয়ে কোরআন হাদিসের আলোকে দলিলভিত্তিক বয়ান পেশ করেন।

প্রতিদিনের মতো দূর দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। গতকাল বিপুলসংখ্যক মহিলাও পর্দা সহকারে মসজিদের নিচতলায় মাহফিলে বক্তাদের আলোচনা শোনেন।

মাহফিলে বক্তারা বলেন, সকল নবী রাসূল সাহাবায়ে কেরাম এবং হযরত ইমাম হাসান (রা) ও ইমাম হোসাইন (রা) সহ আহলে বায়তে রাসূলের (দ) সদস্যগণ নিষ্পাপ, ভুল বিচ্যুতির ঊর্ধ্বে; এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের আক্বিদা। আউলিয়ায়ে কেরাম হচ্ছেন সুপথপ্রাপ্ত, অনুসরণ অনুকরণযোগ্য ও মানবজাতির সর্ববিধ কল্যাণ ও নাজাতের উসিলা।

গতকাল মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের এই শাহাদাতে কারবালা মাহফিল সারা দেশে সাড়া জাগিয়েছে। এমনকি এই মাহফিল এখন আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে। এ জন্য আমরা চট্টগ্রামবাসী গর্ববোধ করি।

বিদেশি আলোচক ছিলেন ভারতের কলকাতা থেকে আগত আল্লামা সাখাওয়াত হোসাইন বারকাতি। এলানে হক বা সত্যের আহ্বান বিষয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, ইয়াজিদের তাঁবুতেও নামাজ আজান ছিল। অন্যদিকে ইমাম হোসাইনের (রা) কাফেলাতেও জামাতে নামাজ আদায় করেছেন নবীপরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ইয়াজিদিদের নামাজের মধ্যে আহলে বায়তে রাসুলের (দ) তাজিম ও স্মরণ না থাকায় সেই নামাজ আল্লাহ পাকের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। সত্যিকার নামাজি ছিলেন হোসাইনি কাফেলার সদস্যগণ। যেহেতু তাঁদের নামাজে নবীপ্রেম ও আহলে বায়তের (দ) স্মরণ ও তাজিম ছিল।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব গবেষক সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি, প্রিয় নবীর (দ) নৈকট্য এবং আহলে বায়তে রাসূলের (দ) অনুগ্রহ লাভ করার জন্যই ৩৮ বছর ধরে জমিয়তুল ফালাহর এই শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন। এই মাহফিলের মাধ্যমে হকপন্থি মুুক্তি প্রত্যাশী মানুষ সত্যের দিশা পাচ্ছে। আজকের ফেতনা ফাসাদের বড় দুঃসময়ে ঈমান আক্বিদা সুরক্ষার সুযোগ পাচ্ছে।

আহলে বায়তের প্রতি ইমামগণের ভালোবাসা বিষয়ে আলোচনা করেন নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুহাম্মদ এনামুল হক সিকদার। আলোচক ছিলেন আল্লামা আব্দুল মোস্তফা আব্দুর রহিম আজহারি।

মাহফিলে অতিথি ছিলেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, জমিয়তুল ফালাহর খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বোরহানুল হাসান চৌধুরী, শাহাজাদা আমিন উদ্দিন খান আব্দুল্লাহ, শাহ সুফি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা আমিরভা-ারী, কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মুহাম্মদ বেলাল, জামেয়ার শিক্ষক মাওলানা মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন আলকাদেরী।

মাহফিল সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল্লামা ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ। মহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, খোরশেদুর রহমান, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম ও দিলশাদ আহমদ। এছাড়া মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষস্থানীয়সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি