জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে হঠাৎ বন্ধ গণপরিবহণ

রাঙামাটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রাঙামাটি শহরের একমাত্র গণপরিবহণ অটোরিকশা ও জেলা শহরের সাথে দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টা থেকে অটোরিকশা সিএনজি বিশেষ করে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে রাস্তায়। তাই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে। অনেককে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। আবার সুযোগে কেউ কেউ নিজস্ব ব্যক্তিগত মোটর সাইকেল ভাড়ার কাজে নামিয়ে দিয়েছেন।

সিএনজিচালক মো. হারুন ও মোসলেম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ঘুম থেকে উঠেই দেখি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। যে পরিমাণ টাকা আয় হয় তার সবই যদি তেল কিনতে বা পরিবহন ভাড়া দিতে ব্যয় হয় তবে আমরা কি খাব আর পরিবারই বা চালাব কিভাবে। ২০১৩ সালের পর আর ভাড়া বাড়েনি। ভাড়া নিয়ে সকাল থেকে যাত্রীদের সাথে চালকদের তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তাই জেলা প্রশাসন থেকে নতুন ভাড়া নির্ধারণ না করা পর্যন্ত শহরের একমাত্র গণপরিবহণ অটোরিকশা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের দাবি জেলা প্রশাসন দ্রুত ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেই পুনরায় গণপরিবহন চালু করবেন।

সকালে যারা কাজে বেরিয়েছেন তারা পড়েছেন গণপরিবহণ সংকটে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাবে। পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দেবে। জ্বালানি তেলের দাম ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে।

হাসপাতাল এলাকার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, সকালে অফিসের উদ্দেশে বের হয়ে দেখি সিএনজি চলছে না। ভাড়া বৃদ্ধি না হলে তারা গাড়ি চালাবে না। এখন বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে অফিসে যেতে হচ্ছে।

বনরুপায় গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা সুমন চাকমা জানান, সকালে কলেজের যাওয়ার জন্য বের হয়েছি, এখন দেখি গাড়ি চলছে না। আমার কলেজে যাওয়া জরুরি আবার যেসব গাড়ি চলছে অন্য চালকরা সেগুলোও বন্ধ করে দিচ্ছে। এভাবে হুট করে বন্ধ না করে ঘোষণা দিলেই হয়। আমরা অন্য ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করতে পারতাম।

সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পগুলোতে বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে।

অপরদিকে বিআরটিসি ছাড়া কোন বাস শহর ছেড়ে যাচ্ছে না। ফলে কার্যত রাঙামাটিবাবাসী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। আর প্রজ্ঞাপনে অপেক্ষায় আছে জেলা প্রশাসন।

রাঙামাটি অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাড়ার হার নির্ধারণ করে দেয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সব ধরনের অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে শহরে। কারণ ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে মারামারি, ঝামেলা এসবের দায় কে নেবে?

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, প্রজ্ঞাপন জারি হলে কি সিদ্ধান্ত হয় সেটা দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। রোববার (আজ) ১১টায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সভা আহ্বান করা হয়েছে।