চট্টগ্রামে মেট্রোরেল

নির্ভরযোগ্য এই প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রাম মহানগরে সত্যিকার অর্থে কোন গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। গণপরিবহন হচ্ছে এমন একটি সমন্বিত ব্যবস্থা যেখানে নির্দিষ্ট স্টেশন থাকবে, সময়মতো যাত্রী পরিবহন করবে। এই নগরে গণপরিবহন বলতে যা আছে তা হচ্ছে মিনিবাসের দাপাদাপি, যার অধিকাংশেরই কোন ফিটনেস নেই। কোন নিয়মই তারা মানে না। রাস্তায় যত্রতত্র প্যাসেঞ্জার তুলতে তুলতে গন্তব্যে ছোটে। যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক মিলে একটি জগাখিচুড়ির পরিবহন ব্যবস্থা এখানে বিদ্যমান। এই বাসব্যবস্থায় সেবা বলতে কিছু নেই, আছে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য।

আধুনিক গণযোগাযোগ ব্যবস্থা শুধু যানজট কমায় না, শহরকে বায়ুদূষণমুক্ত রাখতেও বড় ভূমিকা রাখে। গণপরিবহন ব্যবস্থার একটি স্বপ্নের উপকরণ হচ্ছে মেট্রোরেল। চট্টগ্রামে দেরিতে হলেও এমআরটি বা মেট্রোরেলের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজের সূচনা হচ্ছে। মাটির উপর এবং নিচ উভয়দিক বিবেচনায় নিয়ে এই সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। যেটা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব হবে সেভাবেই মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি টাকা এবং সময় লাগবে আড়াই বছর। কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিএ)।

ঢাকায় মেট্রোরেলের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিলো ২০০৫ সালে। ছয় রুটের মাত্র একটি রুটের বাস্তবায়ন করতে লেগে গেছে প্রায় আঠারো বছর। চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে এই দীর্ঘসূত্রতা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিবহন ভোগান্তি নিরসনে মেট্রোরেল যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে এতে কোনই সন্দেহ নেই। মেট্রোরেল শুধু দ্রুতগতির পরিবহন নয়, এটি পুরো পরিবহনব্যবস্থায় প্রভাব ফেলবে। বাসমালিকদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। পরিবহন সেক্টরে সবাই ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করবে। পরিবহনব্যবস্থায় সুফল পেতে নির্ভরযোগ্য এই প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি।