চট্টগ্রামের টানা জয়ে হারের স্বাদ খুলনার

সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে ফরচুন বরিশালের কাছে হেরে টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পরের ম্যাচেই অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় তারা। মিনিস্টার ঢাকাকে হারানোর পর তৃতীয় ম্যাচে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বন্দরনগরীর প্রতিনিধিত্ব করা দলটি। জয় দিয়ে বিপিএল শুরু করা খুলনা টাইগার্সকে ২৫ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম। খবর ঢাকা পোস্টের।
ম্যাচে আগে ব্যাট করে এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম। স্কোর বোর্ডে ১৯০ রানের পুঁজি জমা করে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দল। ১৯১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য টপকাতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি মুশফিকুর রহিকের খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে তাদের ইনিংস থামে ১৬৫ রানে। এতে ২৫ রানের জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে চট্টগ্রাম।
অথচ ইনিংসের শুরুটা মন্দ হয়নি খুলনার। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রথম ২ ওভারে ১৮ রান তুলে নেন খুলনার দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার এবং তানজিদ হাসান তামিম। বিপত্তি বাধে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে। নাসুম আহমেদের নিচু হয়ে ঢোকা বলটি স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লাইন হারান তামিম। বল সরাসরি পায়ে আঘাত করলে আম্পায়ার আঙুল তুলে আউটের সংকেত দেন। ৯ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তামিমকে।
আগের ম্যাচে ফিফটি করে দলকে জেতানো রনি তালুকদার এ ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি। মিরাজে অফ স্পিনে নীল হন ৭ রানে। তবুও ফ্লেচারের ব্যাটে পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৪৫ রান তোলে খুলনা। কিন্তু সপ্তম ওভারে প্রথম বলটি বাউন্সার দেন চট্টগ্রামের পেসার রেজাউর রহমান রাজা। সেটি পুল করতে গিয়ে আঘাত পান ফ্লেচার। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুড়িয়ে পড়েন। পরে অবস্থা অনুকূলে না আসায় তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নেওয়া হয়।
মাথায় বলের আঘাত পাওয়ায় কনকাশন প্রদ্ধতিতে ফ্লেচারের পরিবর্তে ব্যাটিংয়ে নামেন সিকান্দার রাজা। তার আগে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপে পোড়েন শেখ মেহেদী হাসান। মেহেদী ২৪ বলে ৩০ এবং মুশফিক ১৫ বলে ১১ রানে আউট হলে কার্যত শেষ হয়ে যায় খুলনার জয়ের আশা। তবে শেষদিকে ইয়াসির আলি রাব্বি ও সাব হয়ে নামা রাজা চেষ্টা চালান কিছুটা, লাভ হয়নি তাতে, এতে হারের ব্যবধান কমে শুধু।
পঞ্চম উইকেট পার্টনারশিপে দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। রাজা ১২ বল খেলে ২২ রান করে আউট হলে ভাঙ্গে এই জুটি। থিসারা পেরেরা (০), ফরহাদ রেজা (৬), শুভ (১) আসাযাওয়া মিছিলে যোগ দিলে হারের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে খুলনা। শেষদিকে রাব্বি ২টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে ২৬ বলে ৪০ রান করে শরিফুলের বলে আউট হলে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামে খুলনার ইনিংস। এতে ২৫ রানের জয় পায় চট্টগ্রাম। চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন রাজা, শরিফুল, মিরাজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে চট্টগ্রাম। সোহরাওয়ার্দী শুভর প্রথম ওভারে ২৩ রান সংগ্রহ করে ম্যাচ শুরু করেন কেনার লুইস ও উইল জ্যাকস। মাত্র ৭ বলের ঝড়েই থেমে যান জ্যাকস। কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১৭ রানের ইনিংসটি সাজান ১ চার ও ২ ছয়ের মারে। দ্বিতীয় উইকেটে আফিফ হোসেনের সঙ্গে ২৩ রান যোগ করেন লুইস। রাব্বির দ্বিতীয় শিকার হন ১৪ বলে ২৫ রান করে।
এরপর দলের হাল ধরেন আফিফ ও সাব্বির রহমান। তবে সুবিধা করতে পারেনি তাদের জুটি। রান আউটের ফাঁদে পড়ে আফিফ আউট হন ১৩ বলে ১৫ রান করে। চতুর্থ উইকেটে বড় জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান সাব্বির ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও ফরহাদ রেজার এক ওভারে সাব্বি-মিরাজ দুজনেই জীবন পান। পরে নাভিন উল হককে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন মিরাজ। ২৩ বলে ৩০ রান করেন।
সাকিব উইকেটে থিতু হয়েও ফেরেন ৩৩ বলে ৩২ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে। তার ইনিংসে ছিল একটি ছক্কা। শেষ দিকে বেনি হাওয়েল এবং নাঈম ইসলাম ব্যাটিং ঝড় তোলেন। যেখানে শেষ ৫ ওভারে চট্টগ্রাম সংগ্রহ করে ৬২ রান। হাওয়েল ২০ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ১টি ছক্কা। নাঈম ২ ছক্কায় ৫ বলে ১৫ রান করেন। এতে নির্ধারিত ২০ ওভারে চট্টগ্রাম সংগ্রহ করে ৭ উইকেটে ১৯০ রান। খুলনার পক্ষে কামরুল ২টি এবং নাভীন ও রেজা ১টি করে উইকেট পান।