কঠিন বিপদেও ধৈর্যধারণ শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা

শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কঠিন বিপদেও সত্যকে আঁকড়ে ধরা, দ্বীনের পথ থেকে বিচ্যুত না হওয়া, ধৈর্য ধরে বিপদ ও যাবতীয় প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা এবং সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাকের ওপর ভরসা রাখাই শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও দর্শন।
জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্লাজায় আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে গতকাল আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের চতুর্থ দিনে বক্তারা এ কথা বলেন।
মাহফিলে বক্তারা আরও বলেন, কারবালা ময়দানে আহলে বায়তে রাসূলের (দ) নিষ্পাপ অবুঝ শিশু-নারীরা পর্যন্ত প্রচণ্ড ক্ষুধা ও পিপাসায় ছটফট করছিল। তবুও তাঁরা ধৈর্যহারা হননি। কঠিন বিপদেও ধৈর্য ও সবরের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে সবর ও ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালিব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

প্রধান অতিথি বলেন, কারবালা প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসাইনের (রা) নেতৃত্বে নবী পরিবার তথা আহলে বায়তে রাসূলের (দ) নিষ্পাপ সদস্যগণ ধৈর্য ও ত্যাগের অসামান্য দৃষ্টান্ত রেখেছেন।
মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান গবেষক সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। নবী পরিবারের পরোপকার ও মানবসেবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হাসান (রা) এর কাছে এসে এক ব্যক্তি বললেন, হুজুর ঋণের ভারে আমি জর্জরিত। অথচ ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আমার নেই। ঋণ নিয়েই আমাকে হয়তো মৃত্যুবরণ করতে হবে। হযরত ইমাম হাসান (রা) বললেন, আপনার ঋণের পরিমাণ কতো। লোকটি বলল ৬০ হাজার দিরহাম। নিজের পরিবারের ভরণ পোষণের কথা না ভেবে পুরো ৬০ হাজার দিরহাম লোকটিকে দান করে দিলেন ইমাম হাসান (রা)। এই হচ্ছে নবী পরিবারের দানশীলতা ও পরোপকারের অতুলনীয় দৃষ্টান্ত।
‘হযরত ইমাম হোসাইনের (রা) ত্যাগ, ধৈর্য: প্রেক্ষিত যুবসমাজ’ নিয়ে আলোচনা করেন আল্লামা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত্ তাহেরী। তিনি বলেন, হযরত ইমাম হোসাইন (রা) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ) সদস্যগণের সবর ও ত্যাগের সিঁড়ি বেয়ে আমরা আজ দ্বীন ইসলামের মহা নিয়ামত লাভে ধন্য হয়েছি। কঠিন প্রতিকূল অবস্থায়ও ধৈর্যহারা না হওয়া, দ্বীন ও সত্যের ওপর অবিচল ও দৃঢ় থাকাই হযরত ইমাম হোসাইন (রা) ও শাহাদাতে কারবালার দর্শন
শাহাদাতে কারবালার দর্শন নিয়ে আলোচনায় আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান আজহারি বলেন, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল কোনো ব্যক্তি বিশেষের প্রচারের জন্য সাজানো হয়নি, নবী পরিবারের শান ও মর্যাদা তুলে ধরতেই এবং তাঁদের প্রতি ভালোবাসার তাগিদেই এই মাহফিলের আয়োজন।
মাহফিলে কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী আহমদ বিন ইউসূফ আল আজহারী।
মাহফিল সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ ও হাফেজ আল্লামা আহমদুল হক।

মাহফিলে অতিথি ছিলেন চউকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম, গাউছিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার, ছোবহানিয়া আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ, পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, এমইবি গ্রুপ এর পরিচালক সোয়াইব রিয়াদ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার সিনিয়র আরবী প্রভাষক আল্লামা মুহাম্মদ আবুল হাশেম শাহ্ ও আল্লামা গোলাম মোস্তফা মুহাম্মদ নুরুন্নবী।