আওয়ামী লীগ-বিএনপির মনোনয়নপত্র দাখিল

খাগড়াছড়ি পৌরসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি :
আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গতকাল রোববার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রাজু আহমেদ এর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্মলেন্দু চৌধুরী। এ সময় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থক তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়া বিকালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র রফিকুল আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে তার সাথে সরকারি দলের উল্লেখযোগ্য কোনই নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্মলেন্দু চৌধুরী নিজের জয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পৌর এলাকার ‘পাহাড়ি-বাঙালি’ সকল সম্প্রদায়ের মধ্যকার শান্তি ও সহাবস্থানকে আরো সুদৃঢ় এবং আধুনিক পৌরশহর বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন।
বর্তমান মেয়র মো. রফিকুল আলমের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিলের প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, যিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তার দায়, তাঁর নিজেরই; দল কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর দায় বহন করবে না।
বিএনপি প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের অনাস্থা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ‘লেভেল প্লেয়িং’ ফিল্ড প্রয়োজন। নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে তিনি জয়ী হবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সকালে আওয়ামী লীগের মনোয়ন জমা দেয়ার সময় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর খণ্ড খণ্ড মিছিলে পুরো শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল আর শ্লোগানে নেতাকর্মীরা দৃঢ়তার সাথে জানান, স্বেচ্ছাচারিতা ও নীরব লুটপাটের বিপরীতে এবারের নির্বাচনে খাগড়াছড়ি পৌরবাসী নির্মলেন্দু চৌধুরীর মতো সজ্জন নেতাকেই জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ।
রোববার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিলের সময় বর্তমান মেয়র জানান, তিনি আওয়ামী লীগের কেউ নন। তাই বিদ্রোহী প্রার্থী হবার প্রশ্নই উঠে না। দুই মেয়াদে পৌরসভার দৃশ্যমান উন্নয়নের পাশাপাশি নাগরিক সেবা বৃদ্ধিতে কাজ করেছি বলে সাধারণ ভোটারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থী হয়েছি।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাবেদ হোসেন জানান, রফিকুল আলম দলের মনোনয়ন পাবার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা-তদবির করেছেন। তার বড়ভাই জাহেদুল আলম এবং ছোট ভাই দিদারুল আলম জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি’র কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েছেন। কেন্দ্র থেকে দলের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। বিভিন্ন টিভিতে নিজের মনোনয়ন পাবার বিষয়ে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদ দাবি করেন, চূড়ান্ত মনোনয়ন না পেয়ে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ জব্বার জানান, মো. রফিকুল আলম জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম নির্বাহী সদস্য। গত ৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি সদরসহ জেলার তিন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীর প্যানেল তৈরি করতে বিশেষ বর্ধিত হয়েছে। ঐ সভায় খাগড়াছড়ি সদর পৌরসভায় মেয়র পদে ৭ জনের নাম প্রস্তাব আসে। পরে ঐ প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, বর্তমান পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েলের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সহসভাপতি মনির হোসেন খান জানান, অতীতের দুটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী হেরে গেলেও এবার সে সুযোগ নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী প্রার্থী যথেষ্ট যোগ্য এবং জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। তাঁকে জিতিয়ে আনতে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।