আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না

নগর বিএনপির কর্মিসভায় ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক »
আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে আন্দোলন করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
গতকাল শনিবার বিকালে নগরীর এপোলো শপিং সেন্টারের টাইম স্কয়ার কমিউনিটি সেন্টারে নগর বিএনপির কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় কর্মিসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, চট্টগ্রামে এসে দেখলাম এখানে অনেক ফ্লাইওভার করেছে। পাকা ড্রেন করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য কি করেছে? সাধারণ মানুষের জন্য তারা কিছু দেখে না। দেড় বছরে লকডাউন লকডাউন খেলা করে সরকার মানুষের জীবিকা অর্জনের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যারা আছেন তাদের পাশে ভাইয়ের মতো দাঁড়াই সবসময়। বাবরি মসজিদের ঘটনার সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। যখন বাবরি মসজিদের ঘটনা ঘটল, ডিসি আমাকে ফোন করলেন, আপনারা দ্রুত একটু আসুন, আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। ডিসি বললেন, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক জেলায় জেলায় ফোন করে বলেছেন, বাংলাদেশে কোথাও যেন সাম্প্রদায়িক সমস্যার সৃষ্টি না হয়। কোথাও যেন পূজামণ্ডপ অথবা মন্দির যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এভাবে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম, আমাদের সফল অর্জন সেদিন বাংলাদেশের কোথাও আমরা সেদিন কোনো ঘটনা ঘটতে দেইনি। আর এরা কি করেছে? এদের ভেতরে এজেন্ট আছে। তাদের এজেন্ট দিয়েই ঘটনা ঘটাবার জন্য কুমিল্লার কাজটি করেছে। ওইটার সূত্র ধরে চাঁদপুর, নোয়াখালী আর চট্টগ্রামে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, এই চট্টগ্রামের লোক হাছান মাহমুদ বারবার করে বলছেন এর পেছনে নাকি বিএনপি আছে। এই ঘটনা ঘটাচ্ছেন আপনারা। এসব ঘটনা যদি না ঘটান তাহলে জনগণ তার অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করবে। জনগণের আন্দোলনকে ডাইভার্ট করার জন্য আপনারা এটা করছেন। এটা করতে না পারলে আপনাদের সমস্যা। পরিষ্কার করে বলতে চাই, এখানে বিরোধী রাজনীতির কোনো সুযোগ রাখা হচ্ছে না। আমাদের মিটিং করতে দেয় না। মিটিং করতে গেলে পুলিশ মারে, মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এবারও পুলিশ মিথ্যা মামলা দেওয়া শুরু করেছে। চৌমুহনীর ঘটনায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ-র‌্যাবের সামনে সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করল আর আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের কোনো গ্রহণযোগ্যতা কোথাও নেই। এরা মিথ্যা কথা বলে। একটাও সত্য কথা কোথাও বলে না। জনগণের সঙ্গে সবসময় এরা প্রতারণা করে এসেছে। গত নির্বাচন নিয়ে কথা বলে না এখন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে না। বলে সার্চ কমিটি। ২০০৮ সালে অবৈধ মইনউদ্দিন ফখরুদ্দিনের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতায় গেল। তারপর আদালতকে ব্যবহার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করল।
প্রধান বক্তা মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আগামী নির্বাচন আওয়ামী সরকারের অধীনে হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নেই। এই সরকারের অধীনে কমিটি হতে পারেনা।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সচিব সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি