![Mayor](https://suprobhat.com/wp-content/uploads/2020/06/Mayor-696x392.jpg)
![Mayor](https://suprobhat.com/wp-content/uploads/2020/06/Mayor-696x392.jpg)
#মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন
# হোমসার্ভিস নিশ্চিতে কাজ করবে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবকরা
# ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম
# আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার
:ভূঁইয়া নজরুল :
২০ চেকপোষ্টে নিশ্চিত হবে চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার খ্যাত উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের লকডাউন। এলাকার সকল অফিস, দোকানপাট ও শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখার জন্য আজ সোমবার দিনভর পাঁচটি টিম মাইকিং করেছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে এই এলাকার মানুষ আর ঘর থেকে বের হতে পারবে না। অধিবাসীদের নিত্য প্রয়োজনীয় যেকোনো চাহিদা সরবরাহ করতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে থাকবে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক টিম। আর আইন শৃঙ্খলা নিশ্চিতে মাঠে থাকবে আকবরশাহ ও পাহাড়তলী থানার পুলিশ টিম। একইসাথে টহলে থাকবে সেনাবাহিনীর বিশেষ টিমও।
পুরো এলাকার লকডাউন নিশ্চিতে কি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নেছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন,‘ আমরা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে অধিবাসীদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করছি। আর তা নিশ্চিতে এলাকায় এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরি করা হয়েছে। তারা অধিবাসীদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করবে।‘
তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এই কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে। এলাকার যে প্রান্ত থেকে যে প্রয়োজনে ফোন করা হবে সেবিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, এলাকার কেউ নমুনা পরীক্ষা করতে চাইলে নমুনা দেয়ার জন্য বুথ থাকবে এবং একইসাথে অ্যাম্বুলেন্সও থাকবে।
কিন্তু পুরো এলাকার লকডাউন কোন পরিকল্পনায় নিশ্চিত করা হবে এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা নিশ্চিত করবে।
এবিষয়ে কথা হয় মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) ওয়ারিশ আহমেদের সাথে। তিনি বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টিম যৌথভাবে কাজ করবে। চেকপোষ্টের পাশাপাশি টহল টিমও থাকবে। মূলত সেনাবাহিনী টহলে থাকবে। যাতে আগামী ২১ দিন এলাকার মানুষ ঘর থেকে বের না হয় তা নিশ্চিত করা হবে।
কিন্তু বিশাল এই এলাকার সাথে অনেক এলাকার সংযোগ রয়েছে। এসব সংযোগ এলাকাগুলো কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন,‘ ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড দুটি থানার মধ্যে পড়েছে। পাহাড়তলী ও আকবরশাহ থানা। তবে পুরো এলাকাটি লকডাউন নিশ্চিত করতে ২০টি পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসাতে হবে। আমরা আনসার ও পুলিশের সমন্বয়ে এসব চেকপোষ্ট নিয়ন্ত্রণ করবো।’
তিনি আরো বলেন, এই চেকপোষ্টগুলো নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কেউ বাহির বা বের হতে পারবে না। একইসাথে এলাকার ভেতরের পয়েন্টগুলোতে যাতে কেউ বের হতে না পারে সেজন্য টহল পুলিশ থাকবে।
একই মন্তব্য করেন আকবর শাহ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের কাজ করবে। তবে কোথায় কি করতে হবে তা সমন্বয় করছে সিটি কর্পোরেশন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।
এদিকে সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন কাট্টলী এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, পুলিশ এবং অন্যান্য অনেকের সাথে কথা বলেন। তিনি স্থানীয় অধিবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, লকডাউন এখন সময়োচিত একটি পদক্ষেপ। তাই নিজেদের সুরক্ষায় ঘরে অবস্থান করে করোনা মহামারীকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেজন্য আপনারা দৈনন্দিন প্রয়োজন সীমিত করে ঘরে অবস্থান করুন। অহেতুক কোন গুজবে কান না দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি ও চসিকের নির্দেশনা মেনে চলুন। প্রয়োজনের বাইরে কেনাকাটা করা থেকেও বিরত থাকুন। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই সংগ্রহ করুন।
তিনি আরো বলেন, এলাকার নিম্নবিত্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি জরুরী চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হবে। মুমূুর্ষ রোগী পরিবহনে থাকবে এ্যাম্বুলেন্স। মোট কথা ঘরে থাকার নিশ্চয়তা দেবেন এলাকাবাসী আর আপনাদের প্রয়োজন মেটাতে আছি আমরা।
এই এলাকার যারা অন্য এলাকায় চাকুরি করেন তাদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, তাদের জন্য সাধারণ ছুটি বলবৎ থাকবে। একইসাথে এই এলাকার সকল শিল্পকারখানা এমনকি ওষুধের দোকানও বন্ধ থাকবে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা ওষুধ সরবরাহ করবে।
উল্লেখ্য, এই ওয়ার্ডে ৭৮ হাজার জনগনের মধ্যে গত ১৪ দিনে ১৪৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে মারা গেছেন ৭ জন। আর এজন্যই তা রেড জোনে পড়েছে। নগরীর আরো ৯টি ওয়ার্ড রেডজোনে রয়েছে তবে সেগুলো পর্যায়ক্রমে লকডাউনের আওতায় আনা হবে বলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জানান। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২০০ অতিক্রম করেছে এবং মারা গিয়েছে ১১৭ জন।