সুপ্রভাত ডেস্ক »
এখনো ‘সুযোগ আছে’ মন্তব্য করে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।
গতকাল মঙ্গলবার বন্দরনগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বপন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বিএনপি ক্ষমতায় নেই। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরাও ভালো আছেন। অথচ ২০০১ সালের পর আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেনি। কিন্তু ১৫ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে তাদের বাড়িতে ভালো আছেন। ব্যবসা বাণিজ্য করছেন। একটা পত্রিকায় পড়লাম, মির্জা ফখরুল সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলছেন, সরকার নাকি সকল দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এটি শুধু সত্যের অপলাপ নয়, ডাহা মিথ্যা কথা। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। খবর বিডিনিউজ।
স্বপন বলেন, দরজা বন্ধ করেছে বিএনপি। তারা সারাজীবন পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। ১৯৭৫ এর পর বন্দুকের নল দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তিন পদে একই ব্যক্তি- জিয়াউর রহমান। এভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা পাকা করেছেন। সেনাপ্রধান পদে থেকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হয়েছেন। সেনাপ্রধান পদে থেকে কেউ নির্বাচন করতে পারে না। বিএনপি তাই এমন নতুন আইন চায়, এমন নির্বাচন চায় যেন তারাই ক্ষমতায় আসবে। এত সুখের দিন আর নেই। বাংলাদেশের সংবিধান সব দরজা খোলা রেখেছে। আপনাদের ৬ জন সংসদ সদস্য ছিল। তাদের নির্বাচনকালীন সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার সুযোগ ছিল। দরজা খোলা আছে জেনেই আপনারা তাদের পদত্যাগ করিয়েছেন। দরজা আপনারা বন্ধ করিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন বলেন, সংবিধানের প্রতি যদি শ্রদ্ধাশীল হন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। এখনো সুযোগ আছে। টানেলের শেষ প্রান্তে এখনো আলো আছে।
আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে নামাবেন এই দুঃস্বপ্ন ভুলে যান। আসুন, নির্বাচন করুন। ভোটে মানুষ যদি আপনাদের রায় দেয় তাহলে আমরা ক্ষমতা ছেড়ে দিব। আর যদি মানুষে আমাদের ভোট দেয় তাহলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি স্বীকার করুক আর না করুক, সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। আমরা সরকার গঠন করার পর দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনেও ধস নামানো বিজয়ের মাধ্যমে সারাদেশে জয় লাভ করবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশের গ-গোল সৃষ্টি করছে বিএনপি সমাবেশের নামে। দেশের বাইরেও তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মাঠেও সক্রিয় থাকতে হবে। ডিজিটালিও সক্রিয় থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচনের একটা নিয়ম কানুন আছে। সারা বিশ্বেই সেভাবেই হয়। আমেরিকা, ব্রিটিশ, ফ্রান্সে এবং উন্নত দেশে একইভাবে ওই একই নিয়মে নির্বাচন হয়। নির্বাচন হয়, নির্বাচন কমিশনের অধীনে।
মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই, আমেরিকায় যখন নির্বাচন হয় তখন সেখানে রাষ্ট্রপতি কি পদত্যাগ করেছিল? ট্রাম্প কি পদত্যাগ করেছিল? রাষ্ট্রপতি বাইডেন কি পদত্যাগ করবেন। তাহলে আমরা কোন দোষ করলাম। পাশের দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী কি পদত্যাগ করবেন? তিনি তো প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। নির্বাচন কমিশন বিধিবিধান অনুযায়ী থাকবেন, নির্বাচন পরিচালনা করবেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ফখরুল সাহেব খামোকা লাফালাফি করছেন। বেগম জিয়া মাগুরায় যে স্টাইলে নির্বাচন করেছিল সেই স্টাইলে নির্বাচন করতে চাইছেন ফখরুল সাহেবরা। ওই নির্বাচন এ দেশে হবে না। ফখরুল সাহেব পদযাত্রা, সমাবেশ করছেন। করুক, কারণ তারা অন্য রকমের নির্বাচন চান। যদি জনপ্রিয়তা থাকে বিএনপি নেতারা নির্বাচন করে জয়লাভ করুক। আপনারা তো মানুষের জন্য কাজ করেননি। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমান, সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু উত্তর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষণা করেন।
তাতে সভাপতি পদ পেয়েছেন মো. এরাদুল হক নিজামী ভুট্টো এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মো. নাছির উদ্দিন রিয়াজ।