নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতকানিয়া »
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নাজমুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই বাহিনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তিনি গতকাল মঙ্গলবার সাতকানিয়ায় বিজিবির প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্তভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি চোরাচালান ও মাদক পাচাররোধ, নারী ও শিশু পাচারসহ যেকোনো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে।
মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজিবিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিজিবি’র সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে উন্নীত করা হয়েছে। বিজিবি আজ ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে এ বাহিনীতে অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, যুগোপযোগী ও কার্যকর এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন্স, এটিভি, এপিসি, রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল এবং এয়ার বোটসহ দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে।
নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে মহাপরিচালক বলেন, ‘শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সে-ই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।’ নবীন সৈনিকরা এসব গুণাবলির প্রতিফলন ঘটিয়ে বাহিনীর ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস ইমরান হোসেন সুয়েব, সব বিষয়ে দ্বিতীয় ও শারীরিক উৎকর্ষতা (মহিলা) বিষয়ে ১ম স্থান অধিকারী খাদিজা খাতুন, ফায়ারিং-এ শ্রেষ্ঠ সিপাহী উজ্জল হোসেন ও শারীরিক উৎকর্ষতা (পুরুষ) বিষয়ে ১ম স্থান অধিকারী সিপাহী জনি হোসেনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
উল্লেখ্য, ১০০তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ চলতি সালের গত ১৮ জুন বিজিটিসিঅ্যান্ডসিতে শুরু হয়। প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৫৮২ জন রিক্রুটের মধ্যে ৫৪৪ জন পুরুষ এবং ৩৮ জন নারী মৌলিক প্রণিক্ষণ সম্পন্ন করেছে।