৯০ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

বাঁশখালী ইউপি নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁশখালী »

বাঁশখালীতে চাম্বল ইউনিয়নে স্থগিত ভোটকেন্দ্র ছাড়া বাকী ১৩ ইউনিয়নের ১২৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১১৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আগামী ১৫ জুন ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৪৭টি ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র ৬৭টি। অর্থাৎ প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ১৩ ইউনিয়নের মাত্র ১৩টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকির আওতার বাইরে। এছাড়া বর্ষাকাল হওয়ায় অন্ততঃ ৩২টি ভোটকেন্দ্রে যোগাযোগে চরম দূরবস্থা রয়েছে। ভোটের দিনে বৃষ্টি হলে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণও দূরহ হবে। অপরদিকে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাঁশখালীর ১৪ ইউনিয়নে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ জুন পর্যন্ত ২১ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২৬ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থীকে ৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অভিযানে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মাহমুদুল হাসান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বহু ঘটনার আলোচিত বাঁশখালী নির্বাচনী এমন পরিসংখ্যানের পর নির্বাচন সুষ্ঠু করা নিয়ে চিন্তিত নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনে ছয়টি উপকূলীয় ইউনিয়নকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব ইউনিয়নকে ‘বিশেষ গুরুত্ব’ দিয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনের দিন যাতে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফয়সাল আলম বলেন, ‘বাঁশখালীতে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ অন্যরকম চিন্তা করলে তাদের পরিণতি ভয়ংকর হবে।’ বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে দিনরাত প্রার্থী ও সমর্থকদের সতর্ক করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩টি মামলা করা হয়েছে। কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে আজীবন মনে রাখার মতো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়নে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলেও একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ইভিএম নিয়ে মন্তব্যের কারণে চাম্বল ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপকূলীয় খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সরল, গন্ডামারা ও ছনুয়া ইউনিয়ন ঘিরে বাড়তি সতর্ক থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৩ ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৭টি। এরমধ্যে ১১৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। পুকুরিয়ায় তিনটি, বাহারছড়ায় একটি, কালীপুরে একটি, সরলে দুটি, পুঁইছড়িতে তিনটি, শেখেরখীলে একটি ও ছনুয়ায় চারটি কেন্দ্র ছাড়া বাকিসব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
পুলিশি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পুকুরিয়ার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচটি, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দুইটি। সাধনপুরের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি ঝুঁকিপূর্ণ, তিনটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, খানখানাবাদের ১১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে চারটি ঝুঁকিপূর্ণ ও সাতটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, বাহারছড়ার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ, চারটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, কালীপুরের ৯টি ভোটকেন্দ্রের চারটি ঝুঁকিপূর্ণ, চারটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, বৈলছড়ির ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে চারটি ঝুঁকিপূর্ণ, পাঁচটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, কাথরিয়ার ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ, চারটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, সরলের ১১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ, চারটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, শীলকূপের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ, একটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, গন্ডামারার ১০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি ঝুঁকিপূর্ণ, চারটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, পুঁইছড়ির ১২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ, ছয়টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, শেখেরখীলের ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ও দুটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ছনুয়ার ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ও তিনটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।