সীমান্তের দুই হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া নিয়ে উদ্বেগ অভিভাবকদের

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তের ৭টি বিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী। মর্টারশেলের গোলা ও হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলির ঝুঁকি থেকে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে বন্ধ রাখা হয়েছে সীমান্তের সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে বিপাকে পড়েছে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায় হবে, কখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে এ নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই অভিভাবকদের।
জানা গেছে, মিয়ানমার সীমান্তের খুব কাছেই দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালুখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রহমতের বিল প্রাথমিক বিদ্যালয়। আরকান আর্মি ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষে গোলাগুলির বিকট শব্দ শোনা যায় এই বিদ্যালয়গুলো থেকে। মাঝে মধ্যে তাদের ছোড়া গুলিও এসে পড়ছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এমন অবস্থায় বন্ধ রাখা হয়েছে সীমান্তের ৭টি বিদ্যালয়।
এদিকে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ও বন্ধ। এটি ১৫ ফের্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমানের পরীক্ষাকেন্দ্র। আবার এই বিদ্যালয়ের একটি ভবনে রাখা হয়েছে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির তিন শতাধিক সদস্যকে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চরম উৎকণ্ঠায় সীমান্তের শিক্ষার্থীরা। আর এসএসসি পরীক্ষা এই কেন্দ্রে না অন্য কোথাও হবে তাও জানে না তারা।
অভিভাবকরা জানান, গত বছরেও পরীক্ষা বাতিল করে অন্য সময় হয়েছে। এবারও একই অবস্থা, পরীক্ষার সময় এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সীমান্তে চলমান অস্থিরতায় সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘোষণা করা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমা জানান, সীমান্তের অস্থির পরিস্থিতির কারণে ৫টি স্কুল বন্ধ ও দুটি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে সাতটি স্কুল আপাতত পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায় হবে, কখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে এ নিয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয় চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দুটি স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা কর্মকর্তা এবং ইমিগ্রেশন সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছেন।