রাঙামাটিতে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি :

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আরএস উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী। বিচার না পেয়ে রোববার রাতে লংগদু থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা।
জানা গেছে, ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী (১৬) হারিয়ে যাওয়া ছাগল খুঁজতে বিদ্যালয়ের দিকে যায়। এবং খোঁজাখুঁজি শেষে ফেরার পথে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম ছাত্রীটিকে লেবু দেয়ার জন্য বিদ্যালয়ের পেছনে অবস্থিত ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে ডাকেন। ছাত্রীটি কক্ষে যাওয়ার সাথে সাথে আব্দুর রহিম দরজা বন্ধ করে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন এবং বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেন।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আটরকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ১ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেছে। ব্যস্ততার কারণে এ বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসতে পারিনি। মঙ্গলবার এ বিষয়ে বৈঠকে বসা হবে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মা জানান, মেয়ে এ বছর করল্যাছড়ি আরএস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছে। আমি নিজেও এ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ছাত্রীর বাবা বলেন, ঘটনার পরপরই এলাকার মুরব্বিদের সাথে আলোচনা করে এলাকার চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটির সভাপতি মঙ্গল কান্তি চাকমাকে জানাই। তিনি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু মৌখিক অভিযোগের ৬দিন পরেও কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় ১ অক্টোবর আমার মেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। আমরা দরিদ্র বলে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এখনো পাচ্ছিনা।
ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চার সন্তানের জনক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম আগে মাইনীমুখ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি উপজেলার উগলছড়ি মহাজনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ওই বিদ্যালয়ে চাকুরিত অবস্থায় পাশের এলাকার এক যুবতীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং এক পর্যায়ে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর ওই স্কুলের চাকরি ছেড়ে উপজেলার করল্যাছড়ি আরএস উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, স্কুলে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে তাই প্রায় সময় স্কুলে যাই। ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই ছাত্রীর সাথে দেখা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলেই সত্য মিথ্যা বেড়িয়ে আসবে।’
লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ নূর বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি এবং ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। এরপর রোববার রাতে ভিক্টিমের মা বাদি হয়ে লংগদু থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’