বিভিন্ন উপজেলায় চতুর্থ দিনে কঠোর লকডাউনে তৎপর ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
পটিয়া
কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে পটিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ১৩৫০ টাকা জরিমানা করে আদায় করেছে। ৪ জুলাই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই অভিযানে ৯টি মামলায় এই জরিমানা করেছে।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ ও পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভুমি) নীলুফা ইয়াসমিন পৃথক অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ মোকাবেলা করতে গত ১ জুলাই থেকে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
লকডাউনের চতুর্থ দিন রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ ও পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) নীলুফা ইয়াসমিন উপজেলার হাইদগাঁও ও বাসস্টেশন এলাকায় পৃথক অভিযান করে।
পটিয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নীলুফা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, লকডাউনের চতুর্থ দিনে ২টি অভিযানে ১৩৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান চলমান বলে জানান।
পেকুয়া
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ সামাল দিতে দেশজুড়ে ৭দিন ব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ৩ জুলাই দিন-রাত অভিযান পরিচালনা করেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন।
এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পেকুয়া উপজেলা সদর, পেকুয়া বাজার, মগনামা লঞ্চ ঘাট, হাজিবাজার, টইটং বাজারসহ কলেজ গেইট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন কক্সবাজার জেলার নবযোগদানকৃত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাস ও পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীকি মারমা।
এ সময় অভিযানে হোটেল ও দোকানপাট খোলা রাখায় এবং গাড়ী, পথচারীসহ ৫ টি মামলায় ২ হাজার ৭ শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এছাড়াও সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের টহল জোরদার করে এবং বিভিন্ন স্টেশনে আনচার, সিপিবি ও শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজের রোবট স্কাউট দলের সদস্যরা লোকজনকে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যকে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীকি মারমা বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও লকডাউনের বিধি নিষেধ লঙ্ঘন করায় অর্থ দন্ড করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমূখী সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে জনস্বার্থে ৭দিনব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত লকডাউন অমান্য করে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা আদায় করা হয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন ও লকডাউন বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
নাইক্ষংছড়ি
বান্দরবানের নাইক্ষংছড়িতে লক ডাউনের ৪র্থ দিন পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় চলছিল।
তারপর ও মাঝে মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু কিছু দোকানদার পেটের তাগিদে দোকান খুলছিল। ঐ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখে পড়ায় গুনতে হয়েছে জরিমানা।
৪ জুলাই বেলা সাড়ে ১২ টার কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন।সময় উপজেলার বাইশারী বাজারে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট আশরাফুল হক অভিযান চালিয়ে ৪ দোকানীকে লক ডাউন চলাকালীন দোকান খোলা রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়। দোকনীর মধ্যে রয়ছে বিধান চন্দ্র ধর, বিকাশ ইজিলোড দোকান, মাচিংনু মার্মা, রুমি চাক, কসমেটিকস ষ্টোর, নুরুল হাকিম ফার্নিচার এর দোকান। এদের প্রত্যেক জনকে ৩ শত টাকা করে সর্বমোট ১২ শত টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) মো. আশরাফুল হক গণমাধ্যমকে জানান, লকডাউন চলাকালীন আদেশ অমান্য করায় দন্ড বিধি অনুযায়ী তাদের প্রথম বারের মত জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
আগামীতে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানা দুটোই করা হবে। অপরদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইশারী বাজারের মাছ ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন লোকজনের মাঝে মাস্ক ও সাবান বিতরণ করেন । এসময় উপস্থিত ছিলেন বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এনামুল হক ভুঁইয়াসহ পুলিশ সদস্যরা।
রাজস্থলী
রাজস্থলী উপজেলায় সেনা, পুলিশ, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দা সরকার নিদ্দের্শনা মোতাবেক সর্বাতœক কঠোর লকডাউন মেনে চলার সন্তোষ প্রকাশ করছেন, ৩০৫ পদাধিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান পিএস সি।
গতকাল রাজস্থলী উপজেলা লক ডাউন পরিস্থিতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পরিদর্শন কালে তিনি রাজস্থলী বিভিন্ন স্তরে জনগণের সম্মুখে এ কথা বলেন।
আরো বলেন, হঠাৎ করে রাজস্থলীতে করোনা ভাইরাস বিস্তার বৃদ্ধির কারনে জনগনকে আরো সচেতনতার আহবান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর খন্দকার মো. মাহমুদুর রহমান পিএসসি, রাজস্থলী আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার উপঅধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ মনজুর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শেখ ছাদেক ও ওসি মফজল আহম্মদ খান।
লোহাগাড়া
লকডাউনে বিধি-নিষেধ অমান্য করে কারণে-অকারণে ঘর হতে বের হয়ে আসছে চাইছে লোহাগাড়ার মানুষ। আসছে রাস্তায়- দোকানে।
লকডাউন আমান্য করার দায়ে গত ৩ ও ৪ জুলাই ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায় পৃথক পৃথক ভাবে।
আদালত পরিচালনা করা হয় লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আহসান হাবিব জিতু ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী।
সাথে ছিলেন সেনাবাহিনী ও লোহাগাড়া থানা পুলিশ। দু’দিনের অভিযানে ২৩হাজার ৫শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযান চালানো হয় উপজেলা সদর লোহাগাড়া বতটলী, পদুয়া, চরম্বা ও কলাউজানের বিভিন্ন হাট বাজারে। লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হানিফ জানান, ১ জুলাই থেকে গত ৪দিনে লোহাগাড়ায় করোনায় ২৭ জনের নমূনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে রোগী সনাক্ত হয় ৯জন।