বাস বন্ধ রেখে মালিক- শ্রমিকের বিক্ষোভ

যাত্রীদের দুর্ভোগ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চট্টগ্রাম নগরী থেকে কক্সবাজার-বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সব রুটে দুই ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। আকস্মিক এ ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়েন শত, শত যাত্রী।

সোমবার সকাল ১০টা থেকে শাহ আমানত সেতুসংলগ্ন বাকলিয়া থানার গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন কয়েক’শ পরিবহন শ্রমিক। চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চল বান্দরবান-কক্সবাজার জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রুট পারমিট ছাড়া অবৈধ দূরপাল্লার গাড়ি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবান রুটে চলাচল করছে। স্লিপার কোচের নাম দিয়ে কিছু দ্বিতল বাস চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ও টেকনাফ রুটে চলাচল করছে। এসব বাসেরও কোনো রুট পারমিট নেই। দ্বিতল বাসগুলো মহাসড়কে ধীরগতিতে চলে, এর পেছনে আটকে থাকে অন্য যানবাহন। ফলে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।’

‘রুট পারমিট ছাড়া এসব বাস চলাচলের কারণে বৈধ বাস মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শ্রমিকরা বেকার হচ্ছেন। মালিক-শ্রমিকের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে আমরা দুই ঘণ্টার প্রতীকী কর্মসূচি দিয়েছি। এরপরও সমাধান না হলে এক সপ্তাহ পর আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব এবং এর মধ্য দিয়ে সড়ক-মহাসড়কে রুট পারমিটবিহীন বাস চলাচল বন্ধ করতে বাধ্য করবো’, বলেন মৃণাল চৌধুরী। খবর সারাবাংলার।

ঐক্য পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘দ্বিতল বাসগুলো বিআরটিএ অনুমোদিত নয়। সেগুলো যেমন মহাসড়কে চলছে, তেমনিভাবে আমাদের আনোয়ারা-বরকল সড়ক, বাঁশখালী পিএবি সড়কে অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিকশা, টমটম, ইজিবাইক চলাচল করছে। কিন্তু প্রশাসন সেগুলো বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে এক মাস আগে বিষয়টি অবহিত করেছি। কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেজন্য আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’

এদিকে বিক্ষোভ চলাকালে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরী থেকে কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দরবান এবং দক্ষিণের বিভিন্ন উপজেলায় কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বাস-মিনিবাস দেখলেই আটকে দিয়েছেন শ্রমিকরা। তবে অন্য গাড়ি চলাচলে বাধা দেননি।

হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঘর থেকে বেরিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অধিকাংশই কর্মস্থলের উদ্দেশে কিংবা নানা প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে শাহ আমানত সেতু এলাকায় এসে বাসের অপেক্ষায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

দুর্ভোগে পড়া জাকির হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘অফিসের কাজে জরুরি লোহাগাড়ার আমিরাবাদ যেতে হচ্ছে। সকাল ৯টায় এসে বাসের টিকিট কেটেছি। এখন সাড়ে ১০টা বাজে। বাস ছাড়েনি। কেন ছাড়ছে না, সেটাও বলছে না। দেখলাম, শ্রমিকরা সবাই মানববন্ধন করছে। এর কোনো মানে আছে ?’

কাজল বেগম নামে এক নারী তিন সন্তান নিয়ে কক্সবাজার বাস কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ৮টায় এসেছি। বাস ছাড়বে ছাড়বে করে ছাড়েনি। পরে বলছে ধর্মঘট। অথচ টিকিট বিক্রির সময় সেটা বলেনি। আড়াই ঘণ্টা ধরে এখানে বসে আছি।’