নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় বালি মহালের টেন্ডার জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দিনদুপুরে জসিম উদ্দিন (৪১) নামে এক যুবকের উপর অতির্কিত হামলা করা হয়েছে। আহত জসিমউদদীন টইটং ইউনিয়নের বটতলী মালগাড়া এলাকার মৃত কবির আহমেদের পুত্র। ৯ এপ্রিল সকাল ১০ টায় উপজেলার টইটং বাজার মোস্তাক সওদাগরের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত জসিম উদ্দিন জানান ঘটনার দিন সকালে আমি পারিবারিক কাজে টইটং বাজারে আসি। এসময় টইটং ২ নং ওয়ার্ডের সেলিমুল আহসানের পুত্র এহেছানুল হক আবিদ, এই এলাকার আব্দু রশিদ প্রকাশ বাইশার পুত্র নুরুল কবির ও নুরুল আমিন তারা তিনজন আমাকে দেখামাত্র অকাথ্যভাষায় গালিগাল করে আমার উপর হামলা করে আমাকে আহত করে। আমার পকেটে থাকা ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন এ সময় হামলাকারীরা জসিমকে হাতুড়ি, লোহার রড দিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আহত জসিমকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তারা আরো জানায়, টইটং ইউনিয়নের বটতলী বালু মহালে টেন্ডার হয় গত ৮ এপ্রিল কক্সবাজারে। এ বালু মহালটি বহুবছর ধরে মুনির চৌধুরী ইজারা নিয়ে পরিচালিত করে। সর্বশেষ চলতি বছরে দরপত্র আহবান করলে এহেসানুল হক আবিদ গং আবেদন করে ইজারা পেতে এবং ওই মহালের ইজারা নেওয়ার জন্য জসিমও আবেদন করে তার নিজস্ব লাইসেন্স ও মুনির চৌধুরীর লাইসেন্স নিয়ে তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন এ হামলা চালায়। এদিকে জসিম তার উপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে জানান। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানিয়েছেন তবে ঘটনার খবর পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের পেকুয়ার রাজাখালী আরবশাহ বাজার দখলবেদখল নিয়ে পেকুয়া ও বাশঁখালী এলাকার লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
১০ এপ্রিল সকালে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী আরবশাহ বাজার দখল করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও বাশঁখালী পুইছড়ি এলাকার বাসিন্দা এরশাদুর রহমান চৌধুরী রাজাখালী সীমান্ত ব্রীজের বাশঁখালী পুইছড়ি প্রান্তে লোকজন নিয়ে জড়ো হলে মুহুর্তের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়লে আরবশাহ বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা দিকবেদিক ছুটাছুটি করে।
বাজার কমিটির সভাপতি মৌলভী আব্দুল করিম, বাজার কমিটির সদস্য আবুল বশর, নেজাম উদ্দিন নেজু মেম্বারসহ ব্যবসায়ী ও লোকজনকে সাথে নিয়ে বাজারে অবস্থান করছে। উত্তোজনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানার এস আই সিদ্দিক, এ এস আই আব্দুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির নেতা ও বাশঁখালী এলাকার বাসিন্দা এরশাদুর রহমান চৌধুরী অভিযোগ করেন আমি মহামারি করোনায় রাজাখালী আরবশাহ বাজারে মাস্ক বিতরণ ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উপকরণ বিতরণ করার জন্য বাজারে যেতে চাইলে তারা উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তিনি আরো অভিযোগ করেন আমি বাজার দখল করার চেষ্টা করি নাই, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী করোনাকালীন মাস্ক বিতরণ ও করোনার উপকরণ পেকুয়া থানা পুলিশ এসে আমাকে বিতরণ করতে দেয়নি। তিনি দাবি করেন এই বাজারের জায়গা আমার পৈত্রিক। আমার পূর্ব পুরুষের জায়গা। এটি সরকারিভাবে কোন ধরনের ইজারা দেওয়া হয় না।
সরকারি ইজারাভুক্ত না করে মৌলভী আব্দুল করিম ওই এলাকার কিছু সন্ত্রাসীদের নিয়ে দখল করে রেখেছেন। তিনি বাজার কমিটির সভাপতি সেজে ব্যবসায়িদের জিম্মি করে রেখেছেন।
অহেতুক তাঁরা উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এছাড়াও কে বা কারা মহামান্য হাইকোর্টে রিট করে বাজারের ইজারা দিতে দিচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। অপরদিকে পেকুয়ার রাজাখালীর আরবশাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাওলানা আবদুল করিম বলেন, গতকাল বাঁশখালীস্থ পুঁইছড়ি এলাকার লোকজন বাজারের এসে অস্ত্রসহ মহড়া দেন। মাস্ক বিতরণের কথা বলে আরবশাহ বাজারের খুঁচরা ব্যবসায়ীদের জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেন। রাতে জানতে পারি (শনিবার) সকালে আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুঁইছড়ির লোকজন আরবশাহ বাজার দখল করতে আসবে। এরপর আমরা পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল বশর ও আকতার হোসেন বলেন, জমি পাওয়ার কথা বলে সন্ত্রাসী কায়দায় বাজারটি দখল করার চেষ্টা করে পুঁইছড়ির লোকজন।
পুলিশ প্রশাসনের বাধা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যেকোন মূহর্তে তারা আবারো দখল চেষ্টা চালাবে বলে আমাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন। ধন্যবাদ পেকুয়া থানা প্রশাসনের প্রতি তাদের কঠোর অবস্থানে বাজারটি জবর দখল থেকে রক্ষা পেয়েছে। এছাড়াও ওই জায়গা পরবর্তী বিএস ও দিয়ারা জরিপে বি ইউ আই মাদ্রাসা, ফৈয়জুনেছা স্কুল, এতিম খানার নামে রেকর্ড হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পেকুয়া থানার এসআই ছিদ্দিক আহমদ বলেন, মাস্ক বিতরণের কথা বলে বাঁশাখালীর কিছু লোক আরবশাহ বাজারে আসতে চেয়েছিল। দুই পক্ষে সংঘর্ষে আশঙ্খা দেখা দেয়ায় মাস্ক বিতরণের অনুষ্ঠান করতে দেয়নি। আইনশৃঙ্খলা যাতে অবনতি না হয় সেদিকে নজর রয়েছে পুলিশের।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানান ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।