পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক বসাল ভারত

সুপ্রভাত ডেস্ক »

অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বাড়তে থাকায় পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত; যা ঘোষণার পর থেকেই কার্যকর হবে। গতকাল শনিবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানায়, যা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়াতে রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে বাড়তি এ শুল্ক আরোপের পথে হাঁটল প্রতিবেশী দেশটি।

রয়টার্স লিখেছে, দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় পেঁয়াজ, টমেটোসহ বেশি ব্যবহার হয় এমন প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে। গত কয়েক মাসে এসব সবজির দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গত জুলাইতে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ হয়েছে, যা ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের মাসে এ হার ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।

অগাস্টের বড় সময়জুড়ে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে দেশটিতে। সবজি উৎপাদনেও এর প্রভাব পড়ছে। এতে দাম বাড়ছে সব ধরনের সবজির।

অন্যদিকে ভালো মানের পেঁয়াজ হয় এমন কিছু এলাকায় জুলাইয়ে বন্যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে রান্নার নিত্য ব্যবহারের এ পণ্য বলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা।

অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ ভারত থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশ পেঁয়াজ আমদানি করে থাকে। তবে নিজেদের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখাই শুল্ক বাড়ানোর কারণ বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহে বলেছেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা তাদের জানিয়েছেন, সে দেশের ভেলেরো সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় এবং সেগুলোর জাতও ভালো। এবার ওই এলাকায় বন্যা হওয়ায় তাদের পেঁয়াজের মজুদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে।

নিজ দেশের সংকট এড়াতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে বলেও সেসময় দেশটির ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানতে পারার কথা বিডিনিউজকে জানিয়েছিলেন মিরপুর শাহ স্মৃতি মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল।

ভারতের নিজেদের বাজারে সংকটের কারণে রপ্তানি কমানো হচ্ছে জানিয়ে গত ১২ অগাস্ট ঢাকার শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়তদার সমিতির সভাপতি হাজি মো. সাহিদ বলেছিলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ পাঠানোর গতি অনেক কমে গেছে। যত দ্রুত পারা যায় ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আনার চেষ্টা করছি আমরা। কিন্তু ব্যাংকগুলো ডলার সংকটের কারণে এলসি দিতে পারছে না।’

সরবরাহ সংকটে বাংলাদেশেও পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয় মৌসুম শেষ না হতেই। লাফিয়ে লাফিয়ে কয়েক দিনের ব্যবধানেই পেঁয়াজের দামে সেঞ্চুরি হয়। তখন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১৪ জুন পেয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার।

ভারত থেকে তখন পেঁয়াজ আসা শুরু হল দাম পড়তে থাকে। তবে গত সপ্তাহ থেকে আমদানিতে গতি কমলে আবার দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।