পাহাড় কাটছে কাউন্সিলররা

সিডিএ ও চসিকসহ সরকারি সংস্থার ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা ইচ্ছামতো পাহাড় কাটছেন বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। গত ৩ মার্চ সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৫তম সভায় এসব অভিযোগ করেন জেলা প্রশাসক। সংবাদমাধ্যম অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে।

কাউন্সিলরের কথা বললেও তাঁদের নাম সভায় বলেননি জেলা প্রশাসক। তিনি আরও অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (সিডিএ) পাহাড় কাটছে। সরকারি সংস্থার এমন ভূমিকা উদ্বেগের। জেলা প্রশাসনের একার পক্ষে পাহাড় কাটা বন্ধ করা সহজ নয়। এ জন্য অন্যান্য সরকারি সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে হবে।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের বেলায় পাহাড় কাটা হয়। সভায় তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন রাস্তা করছে। রাস্তা করবে ভালো কথা। কিন্তু পাহাড় কাটার অনুমতি তো তারা নিতে পারে। কাউন্সিলররা সিটি করপোরেশন থেকে একটি কাগজ নিয়ে ইচ্ছামতো পাহাড় কাটছেন। দু-একজন কাউন্সিলর এমনভাবে পাহাড় কাটছেন, তাতে অনেকগুলো পাহাড় নষ্ট করে দিয়েছেন।
পাহাড়ের বেশির ভাগ অবৈধ স্থাপনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির, তাঁদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়, অন্যায় মানে অন্যায়। অবৈধ মানে অবৈধ। অবৈধ স্থাপনা যাঁরই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় সিটি করপোরেশন ও সিডিএর দায়িত্বশীল প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীরা কীভাবে গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ পান, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় সভায়। বৈধতা না থাকার পরেও কীভাবে গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ পায় তা খুঁজে বের করার কথা বলা হয়।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ এলাকার উত্তর পাহাড়তলী মৌজার খতিয়ানে ১৭৮ নম্বর দাগে তিনটি পাহাড়ের কথা উল্লেখ আছে। সেখানে ১২ শতক জমির মালিক ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং তাঁর স্ত্রী। সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনটি পাহাড়েই কোপ পড়েছে কাউন্সিলরের লোকজনের। পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করে বিক্রি করছেন তিনি।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ৮ দশমিক ৬০ একরের তিনটি পাহাড়ের মাত্র ২০ ভাগ এখন অবশিষ্ট আছে। পাহাড়ি ভূমির মধ্যে এক একরের মতো ব্যক্তিমালিকানাধীন, বাকি পাহাড় সরকারি বিভিন্ন সংস্থার।
পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা থাকা অন্যায় ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। অন্যায় মানে অন্যায়। অবৈধ মানে অবৈধ। অবৈধ স্থাপনা যারই হোক, ব্যবস্থা নিতে হবে।