দুই মামলায় আসামি ৫৫০, গ্রেফতার ২৫

নৌকার কার্যালয়ে হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বিএনপির পদযাত্রা থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এতে বিএনপির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় প্রায় সাড়ে পাঁচশত নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে হামলার পরপর ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা।

আওয়ামী লীগের করা মামলায় নগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপরদিকে খুলশী থানার এসআই বাদি হয়ে করা মামলায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে বিএনপির অফিসে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করতে পারেনি বিএনপি। নগরীর কোতোয়ালী থানায় এজাহার দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ না করে বিএনপিকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে দলটি।

এ দুই ঘটনায় একপক্ষ আরেক পক্ষকে দায়ী করছেন। এ মামলায় ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার আরিফুল ইসলাম নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মী এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আড়াই থেকে ৩০০ বিএনপি নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ বাদি হয়ে দায়ের করা অপর মামলায় বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখপূর্বক ২শ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোস কুমার চাকমা বলেন, ‘বুধবারে লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা একটি মামলা করেছেন। আর সন্ত্রাস ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।’

অন্যদিকে বিএনপির দলীয় কার্যালয় কাজির দেউড়ির নাসিমন ভবনে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যানার ফেস্টুনে আগুন, ভাঙচুরের ঘটনায় কেয়ারটেকার কাজী মাহমুদ হোসেন কোতোয়ালী থানায় দুইজনের নাম উল্লেখপূর্বক এবং ২০০/২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করতে গেলে কোতোয়ালী থানা এজাহারটি গ্রহণ করেনি বলে দাবি করছে বিএনপি।

বিএনপির এজাহারটি নিয়ে যাওয়া সাবেক পিপি ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা কোতোয়ালী থানায় গেলে, সেখানে ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) ছিলেন না। আমাদের দুইতলায় দীর্ঘ ৪০ মিনিট ধরে বসিয়ে রাখছেন। ওসি তদন্ত আমাদের বলেন, আমাদের অফিসে হামলার কোন ঘটনা নাকি হয়নি। ফলে তিনি এজাহার গ্রহণ করেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তত ৪০ জন আইনজীবী গিয়েছিলাম। কোতোয়ালি পুলিশ ঘটনার বিষয়টি কোন গুরুত্বই দিল না। রোববার আদালত খুললে আমরা মামলার বিষয়টি ভেবে দেখবো।’

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ওসি তদন্ত রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘বিএনপি একটি এজাহার নিয়ে এসেছিলো। তাদের মামলা নেইনি অভিযোগটি মিথ্যা। ওসি স্যার ছিলেন না, আমি তাদেরকে রাতে আসতে বলেছি। ওনারা আসলে মামলা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘বিএনপি এজাহার নিয়ে যখন এসেছিলো, তখন আমি থানায় ছিলাম না। আমি লালদীঘিতে ডিউটিতে ছিলাম। তাদের সাথে পরে ফোনে কথা হয়েছে, ওনাদেরকে রাতে আসতে বলেছি। তারা আসলে আমি এজাহার দেখে সিদ্ধান্ত নেবো।’

উল্লেখ্য, বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে বিএনপির পদযাত্রা শেষে ফেরার পথে নগরীর লালখানবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসনের উনির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিউদ্দীন বাচ্চুর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ক্যাম্পের ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ। এ ঘটনার জেরে বিকেলেই নগর বিএনপি অফিসে পাল্টা হামলা চালায় সরকার দলীয় কর্মীরা। আগুন লাগিয়ে দেয় হয় বিএনপির ব্যানার ও ফেস্টুনে।